ব্রাজিলের জাতীয় জাদুঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অবস্থিত দুইশ বছরের পুরোনো জাতীয় জাদুঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।

সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল স্থানীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম জি-১-এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। তবে এতে এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ১৮১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ জাদুঘরটির এ বছরের শুরুতে জাতীয় জাদুঘরের দুইশ বছর পূর্তির উৎসব হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ভবনটিতে জাতীয় জাদুঘর, সেটি পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক আমলের। এ ভবনেই থাকতেন পর্তুগিজ রাজপরিবারের সদস্যরা।

ঔপনিবেশিক শাসনের পর ভবনটিতে জাদুঘর স্থাপন করা হয়। সেখানে প্রায় দুই কোটি দর্শনীয় উপকরণ ছিল। যার মধ্যে মমি, উল্কাপিণ্ড, পোকামাকড়ের জীবাশ্মের মতো দুর্লভ উপকরণও ছিল।

অগ্নিকাণ্ডের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভয়াবহ রকমের আগুন জ্বলছে ভবনজুড়ে। আগুনের শিখা অনেক ওপরে পর্যন্ত উঠে যায়।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট মিচেল তেমের এক টুইটে লিখেছেন, ‘জাতীয় জাদুঘরের উপকরণ ভস্মীভূত হওয়ার মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। দুইশ বছরের কাজ, গবেষণা, জ্ঞান হারিয়ে গেছে। ইতিহাসের এই মূল্য কখনো পরিমাপ করা যাবে না। সব ব্রাজিলিয়ানের জন্য আজ শোকের দিন।’

বিবিসির দক্ষিণ আমেরিকাবিষয়ক প্রতিবেদক কেটি ওয়াটসন বলছিলেন, ‘এটা শুধু ব্রাজিলের ইতিহাস ভস্ম হয়ে যাচ্ছে তাই নয়, অনেকেই একে শহর বা গোটা দেশের রূপক হিসেবেই দেখেন।’

রিও ডি জেনিরো এমনিতেই সমস্যার মধ্যে রয়েছে। সন্ত্রাসের উত্থান, অর্থনৈতিক মন্দা আর লাগামহীন রাজনৈতিক দুর্নীতির কারণে ব্রাজিল সংকটে রয়েছে। তার মধ্যেই এই ভয়াবহ ক্ষতিপূরণের মুখে পড়ল দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের দেশটি।

জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে একে ‘সাংস্কৃতিক ট্র্যাজেডি’ বলে উল্লেখ করেছেন।