ভুয়া ছবির জন্য ক্ষমা চাইল মিয়ানমার সেনাবাহিনী

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ‘সত্য কথন’ তুলে ধরা বইয়ে ভুয়া ছবি ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চেয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ভুলভাবে ছবিগুলো প্রকাশিত হয়েছে বলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গত জুলাইয়ে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রকাশিত ‘মিয়ানমারের রাজনীতি ও সেনাবাহিনী: প্রথম পর্ব’ নামক বইয়ে ভুল ছবি প্রকাশের জন্য সোমবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মুখপত্র মিন্দানাও ডেইলিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ক্ষমা চাওয়া হয়। খবর রয়টার্সের।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ভুলের জন্য পাঠক এবং ওই ছবি দুটির আলোকচিত্রীদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী’।

‘মিয়ানমার পলিটিকস অ্যান্ড দ্য টাটমাডো: পার্ট ১’ শিরোনামের বইটি গত জুলাই মাসে প্রকাশিত হয়। ১১৭ পৃষ্ঠার বইটি প্রকাশ করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বিভাগ। তবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সত্য কথনের এই বইয়ে তারা ব্যবহার করে পুরোপুরি ভুয়া ছবি। আর সেখানে রোহিঙ্গাদের বাঙালি বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।

বইটিতে রাখাইনের আর্কাইভ ছবি হিসেবে একটি ছবি দেয়া হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, পানিতে ভেসে থাকা লাশ একজন ব্যক্তি উঠানোর চেষ্টা করছেন। ছবির ক্যাপশন হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘বাঙালিরা স্থানীয় জাতিগোষ্ঠিদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।’

তবে আসল কথা হলো, এই ছবিটি রাখাইনে হত্যাযজ্ঞের নয়। এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বাঙালিদের নিহত হওয়ার ছবি।

অপর একটি ছবিতে দেখা গেছে হাজার হাজার লোক তাদের দেশ থেকে পালিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে চলেছেন। এই ছবি দিয়ে তার ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ‘ব্রিটিশ ঔপনিবেশকতার সময়ে বাঙালিরা মিয়ানমারে প্রবেশ করছে।’ তবে আসলে ছবিটি হলো তাঞ্জানিয়ার।

গত বছরের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর গণহত্যা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। সেসময় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এই ঘটনার পর থেকে রোহিঙ্গাদের বাঙালি হিসেবে উপস্থাপন করে এই নির্যাতনের পক্ষে বহুবার সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং দেশটির সরকার। তবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে মিয়ানমারের বলা এসব কথা কখনই গ্রহণ করেনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।