রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে আইডিবিকে পাশে থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবর্তনের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য চাপ অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সুনির্দিষ্ট কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার ঢাকায় ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) ‘রিজিওনাল হাব’ উদ্বোধন উপলক্ষে হোটেল রেডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহম্মদ (স.) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি তখন আইডিবি নিশ্চুপ থাকতে পারে না। কাজেই জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করার জন্য আইডিবিকে আমি দৃঢ়ভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে একটি মানবিক সংকট মোকাবেলা করছে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়ে তাদের প্রবেশ করতে দিয়েছে। নিজস্ব সম্পদ, বাস্তুসংস্থান ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে জানা সত্ত্বেও বাংলাদেশ তাদের অনুপ্রবেশ করতে দিয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও খাদ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চাই।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আইডিবির সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে বিনিয়োগের চাহিদা, বর্তমান অবস্থা ও ঘাটতি পর্যালোচনা করার জন্য কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (২০১৬-২০২১) চালু করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরিকল্পনা মতে সম্পূর্ণ মেয়াদে মোট ১১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস হতে এ পর্যন্ত ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। অর্থাৎ আরও ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি পূরণে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের নিজস্ব উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন এবং অভিযোজন করার জন্য “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার” আওতায় বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড” গঠন করেছি।

দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য ও বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত যেকোনো ইস্যুতে বাংলাদেশ অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্র।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এমএইচ হাজ্জার প্রমুখ।