আলোকচিত্রী শহিদুলের ডিভিশন বহাল

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মামলায় বন্দি আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলমকে কারাবিধি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির মর্যাদা (ডিভিশন) দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত, তা উচ্চ আদালতও বহাল রেখেছেন।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) সাইফুজ্জামান হিরো আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশের ২০ দিন পর আজ সোমবার সকালে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টে তা বাতিল চেয়ে একটি আবেদন করে।

শহিদুল আলমের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ এ ধরনের একটি আবেদন করেছিল। তা চেম্বার জজ ইমান আলীর আদালতে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত শহিদুলের ডিভিশন বহাল রাখেন আর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।

গত ৫ আগস্ট রাতে শহিদুল আলমকে তাঁর ধানমণ্ডির বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল। পরে তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ বলেন, ‘শহিদুলকে ধরে নিয়ে গেছে ডিবি পরিচয়ে একদল লোক।’

এর পরে ডিবির পক্ষ থেকে শহিদুল আলম তাঁদের হেফাজতে আছেন বলে জানানো হয়। পরের দিন বিকেলে ডিবি পুলিশের (উত্তর) পরিদর্শক মেহেদী হাসান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে রমনা থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় শহিদুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিনই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আরমান আলী আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানান। পরে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আছাদুজ্জামান নূর শহিদুলকে সাত দিনের রিমান্ড দেন। পরে ১২ আগস্ট শহিদুল আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গত ১৪ আগস্ট শহিদুল আলমের পক্ষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালতে জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। ‌১১ সেপ্টেম্বর এর শুনানি হয়। কিন্তু তাতে জামিন পাননি শহিদুল। শহিদুলের জামিন আবেদনটি ওই দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতের প্রতি হাইকোর্টেরও নির্দেশনা ছিল।

এরই মধ্যে শহিদুল আলমের সমর্থনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, ভাষাবিদ নোয়াম চমস্কি, লেখক অরুন্ধতী রায়সহ খ্যাতিমান একাধিক লেখক-বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দেন। পেন ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠনও তাঁর পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। সর্বশেষ আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা টিউলিপ সিদ্দিক।