প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী রিয়াজ ও ফেরদৌস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৩ তম অধিবেশনে যোগ দিতে ৬ দিনের সরকারি সফরে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন। আগামী শুক্রবার নিউ ইয়র্কের পথে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।

তার এই গুরুত্বপূর্ণ সফরে সঙ্গী হবেন দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ ও সংস্কৃতিকর্মীরা। তাদের মধ্যে থাকছেন ঢাকাই সিনেমার নন্দিত দুই চিত্রনায়ক রিয়াজ ও ফেরদৌস। তারাও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে আগামীকাল শুক্রবার ঢাকা ছাড়বেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, ‘হ্যাঁ, সত্যি এই সৌভাগ্যটা হতে যাচ্ছে আমার ও ফেরদৌসের। প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে রাষ্ট্রীয় সফরের সুযোগ পাওয়া অনেক সম্মানের একটি ব্যাপার। আমি আমার রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ গুরুত্বপূর্ণ এই সফরের জন্য আমাকে প্রয়োজন মনে করায়।’

এ নায়ক আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বরাবরই শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি আবেগী। আমাদের চলচ্চিত্রের প্রতিও তিনি অনেক আন্তরিক। তার সফরে আমাকে ও ফেরদৌসকে রেখে তিনি সেই প্রমাণটাই আবার দিলেন। সবার কাছে দোয়া চাই যেন প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় এ সফর সফল হয়।’

সফরে সিনেমা বিষয়ক কোনো কর্মসূচি রয়েছে কী না জানতে চাইলে রিয়াজ বলেন, ‘এ বিষয়টি এখনো আমি নিশ্চিত নই। শিডিউল আজ (বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হাতে পাবো। তখনই আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।’

চিত্রনায়ক ফেরদৌস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটি অনেক সম্মানের একটি বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাকে পছন্দ করেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা চিরকাল বহমান থাকবে। আশা করছি এই সফর দেশ ও জাতির জন্য অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী এই দুই নায়ককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। চিত্রনায়ক রিয়াজ চলতি মেয়াদে শিল্পী সমিতির সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চিত্রনায়ক ফেরদৌসও দায়িত্ব পালন করছেন কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে।

এদিকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাধারণ পরিষদের ৭৩ তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন এবং একই দিনে তার জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেজের সঙ্গে বৈঠক করারও কথা রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন- এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালিজুলেইদ এবং নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট।

প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও’র সঙ্গেও স্বাক্ষাৎ করবেন।

শুক্রবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট ব্রিটিশ রাজধানী লন্ডনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। একই দিনে লন্ডনের স্থানীয় সময় ৩ টা ৫৫ মিনিটে বিমানটির হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন।

ব্রিটিশ রাজধানীতে দু’দিনের যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটযোগে নিউইয়র্কের পথে লন্ডন ত্যাগ করবেন। বিমানটির ঐদিনই স্থানীয় সময় ১টা ৪০ মিনিটে নিউ জার্সির নিউইয়র্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ জিয়াউদ্দিন এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন।

২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের নিউইয়র্কস্থ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং শেষে সেদিন বিকেলে শেখ হাসিনা নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজের একটি বিমানযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন।