যশোর কোতয়ালি থানার এসআই হাসানের চলছে লাগামহীন আটক বাণিজ্য

যশোর কোতয়ালি মডেল থানার সিভিল টিমের দারোগা হাসানের আটক বাণিজ্যে চরমে উঠেছে। দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কোন মামলা না থাকলেও টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের আটক করে নিয়ে আসে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে অনেক সময় মামলা থাকে আবার জেলগেট থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে টার্গেটকৃতদের আটক করে। পরে আটককৃতদের মোবাইল দিয়ে তার পরিবার বা স্বজনদের ফোন দিয়ে টাকা দাবি করছে। এসময় বলা হচ্ছে টাকা না দিলে ফেলে দেয়া হবে (কথিত বন্ধুক যুদ্ধ) অথবা নাশকতা মামলায় আসামি দিয়ে চালান দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। ফলে জীবনের মায়ায় হাসানের কাছে হাজির হতে হচ্ছে।

অভিযোগে জানা গেছে, রবিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) যশোর শহর ও শহরতলী থেকে দারোগা হাসান ও তার সহযোগিরা বিভিন্ন লোকজন আটক করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে- বেজপাড়ার ফুয়াদ হাসান, অনুপ ও ইমরান। এদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। নীলগঞ্জ এলাকা থেকে দিদার, জাহিদুল, তুহিনকে আটক করা হয়। এদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। পুরাতন কসবা থেকে আটক করা হয় মিজানুর রহমানকে। তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। বেজপাড়ার মারামারি ও ছিনতাই মামলার চার আসামিকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে ৩২ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

অভয়নগরের সালিআর্ট এলাকার অপহরণ মামলার আসামি ইমলাক ৬ মাস পর রোববার বিকালে জেলখানা থেকে বের হয়। জেলগেট থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। এসময় তার ভাইকে ফোন করে বলা হয়েছে। রাতের মধ্যে ২ লাখ টাকা না দিলে তাকে ফেলে দেয়া হবে।

ভুক্তভোগীরা জানান, সিভিল টিমের হাসান তার সহযোগী এএসআইরা প্রতিদিন আটকের টার্গেট নিয়ে বের হয়। সৌসদের টার্গেটকৃতদের অবস্থান নিশ্চিত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আটক করছে। আটককৃতদের থানায় এনে ভিতরে এএসআইদের রুমে রেখে চালানো হয় টর্চার। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। রাজি হলে তাকে এ পথে আনা হয় না।

ভুক্তভোগীরা জানান, শনিবার বিকালে বেজপাড়া থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করে। পরে তার পরিবারের লোকজন থানায় এসে খুঁজে না পেয়ে দারোগার নম্বরে ফোন দিলে ভিতরে যাওয়ার কথা বলে। এএসআই রুমে গিয়ে দেখে তার হাতপা বেধে রাখা হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অবস্থা দেখে তারা দ্রুত টাকার ব্যবস্থা করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে প্রথমে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমান সে গুরুতর অসুস্থ।

এভাবে দারোগা হাসানের প্রতিদিন চলছে আটক বাণিজ্য। পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, হাসানের আটক বাণিজ্যের টাকা কয়েকটি অংশ ভাগ হয়। ভাগের অংশ পেয়ে অনেকেই চুপ থাকে। যার কারণে হাসান লাগামহীন ভাবে আটক বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।