এইচ টি ইমামের পরিসংখ্যান উদ্ভট : রিজভী

দেশে আওয়ামী লীগের ৪২ শতাংশ আর বিএনপির ৩০ শতাংশ ভোট রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম যে সমীক্ষার দাবি করেছেন তার কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘এইচ টি ইমাম গায়েবি পরিসংখ্যান ব্যুরোর অধিকর্তা সেজেছেন। তিনি (এইচ টি ইমাম) বলেছেন আওয়ামী লীগের ভোট নাকি ৪২ শতাংশ, আর বিএনপির ৩০ শতাংশ। এসব উদ্ভট পরিসংখ্যান এইচ টি ইমামের নিজস্ব, নাকি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ উপদেষ্টার তা জাতির জানার আগ্রহ আছে।’

বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘এহেন অলৌকিক পরিসংখ্যান এইচ টি ইমাম সাহেবের মাথা থেকে আসাটা যৌক্তিক এ কারণে যে, তিনি খন্দকার মোশতাকের সহযোগী হিসেবে কাজ করার বিব্রতকর অবস্থা কাটাতে এখন প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করার জন্য মোসাহেবদের ম্যারাথন দৌঁড়ে এগিয়ে থাকতে চান। তবে প্রধানমন্ত্রীর মনে রাখা উচিৎ যারা হুজুরের কথায় অমতকার বলে মোসাহেবি করেন তারা বিপজ্জনক।’

রিজভী বলেন, ‘তিনি (এইচটি ইমাম) নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় নেতাকর্মীদেরকে আক্রমণাত্মক হতে হবে বলেছেন, যা শুধু নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী নয়, বরং আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী নেতাকর্মীদেরকে সন্ত্রাসী হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডে উস্কানি দেয়ার শামিল। আগামী জাতীয় নির্বাচনটি যে ভোটার ছাড়াই হবে এইচ টি ইমামের বক্তব্য সেটিরই পূর্বাভাস।’

তিনি বলেন, ‘এইচ টি ইমাম সরকারের গোপন পরিকল্পনা মাঝে মাঝে প্রকাশ করে দেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করলে তিনি কীভাবে বাছাই করা প্রশাসনের লোকদের দিয়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্র নিজেদের আয়ত্বে রাখবেন সেটিও পরবর্তীতে প্রকাশ করেছেন।’

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- পুলিশের কাছে নাকি তথ্য আছে বিএনপি আন্দোলনের নামে নাশকতার ছক আঁকছে। সেই জন্যই হাতিরঝিল থানায় বিএনপি মহাসচিবসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের নামে মামলা হয়েছে। আমি ওবায়দুল কাদেরকে বলতে চাই আপনাদের মতো আপনাদের পুলিশও এখন গায়েবি তথ্য উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। আপনাদের পুলিশ এমনই যে, ঐ মামলায় বর্ণিত ভাঙচুর হওয়া গাড়ির নম্বর জানে না।’

তিনি বলেস, ‘এছাড়াও সম্প্রতি দায়ের করা অনেক মামলায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপি নেতাকেও আসামি করা হয়েছে। মামলা দেয়া হয়েছে হজে থাকাকালীন অবস্থায়ও। মামলা দেয়া হয়, হাসপাতালে শায়িত ৮৩ বছর বয়স্ক বিএনপি নেতার নামে এবং বিদেশে থাকলেও। পুলিশ বলেছে মগবাজারে ঘটনা ঘটেছে, অথচ সাংবাদিকরা সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে ওই এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর বা ককটেল বিস্ফোরণের কোনো তথ্য প্রমাণ পাননি। এমনকি ওই এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও গাড়ি ভাঙচুর বা ককটেল বিস্ফোরণের কথা জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।’

রিজভী বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের লোকেরা দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা দেখে স্বজনরা ব্যথিত হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে চিকিৎসাহীন অবস্থায় রাখা হয়েছে। বাম হাত-পা, হাতের আঙুল নড়াচড়া করতে কষ্ট হচ্ছে। ফিজিওথেরাপি একরকম বন্ধই করে দেয়া হয়েছে। দেশনেত্রীকে গভীর স্বাস্থ্য সঙ্কটের মধ্যে রাখাটাই যেন সরকার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই জন্যই দেশনেত্রীকে চিকিৎসা বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। আমি আবারও বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দানুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে তড়িৎ চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’