বিএনপিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হোক। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হোন। পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না। এটা করে লাভও হবে না।’ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিতে ১৪ দলের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘কোনোভাবেই কেউ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। হুমকি দেবেন না, প্রতিনিয়ত হুমকির কথা বলার কারণে এটা খেলো হয়ে গেছে। হাস্যরসের উপাদান সৃষ্টি করছে।’ তিনি বলেন, ‘হতাশায় না থেকে এই নির্বাচনে আসুন। আন্দোলন করে বা নির্বাচন করে আপনাদের নেত্রীকে মুক্ত করুন। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। দেশবাসী এখন দিন গুনছে, কখন সেই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোট দিতে পারবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় সব দলই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শুধু কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট নানা রকম বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা রকমভাবে হুমকি দিচ্ছে। দেশ যখন নির্বাচনে প্রস্তুত হয়ে গেছে, যখন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, এটা মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে, তখন কী কারণে বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছি না।’

ক্ষমতাসীন জোটের মুখপাত্র বলেন, ‘তারা (বিএনপি) প্রতিনিয়ত আন্দোলনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। কিসের আন্দোলন? কার বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে? কার জন্য আন্দোলন হবে?’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নাকি দেউলিয়া হয়ে গেছে। দেউলিয়া কখন হয়? যখন কর্মী থাকে না, সংগঠন থাকে না? তখন দেউলিয়া হয়। আর বিএনপির অবস্থা কী? নেতাই এখন নেই, এখন নেতা ভাড়া করতে হচ্ছে। তারাই দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন সেই দল যখন দেউলিয়ার কথা বলে, এটা তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চিরকালই জনগণের ভালবাসায় বন্দি আছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দল জনগণের ভালবাসায় বন্দি থাকবে, চিরদিনেই বন্দি থাকবে।’

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, ‘আপনার নেত্রী আইন অনুযায়ী গ্রেফতার হয়েছেন। তাই আইনের পথ দেখুন। তার ব্যারিস্টার সহকর্মীরা কী করছে এতদিন ধরে? এতদিনেও মুক্ত করতে পারলেন না? আপনাদের একজন ব্যারিস্টার নেতা আছেন। তিনি প্রতিদিন ঘোষণা করেন, মাস ঘোষণা করেন। একজন উকিল যখন মক্কেল ধরেন, তখন সবসময় বলে যান, তুমি বেঁচে যাবে। ওই ব্যারিস্টার নেতাও এখন এই কথা বলছেন, বিএনপিকে অক্সিজেন দিয়ে যাচ্ছেন। এই ধরনের ব্যারিস্টার ধরে লাভ হবে না।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক জাসদ একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জাতীয় পার্টি (জেপি)’র মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুর বশর মাইজভান্ডারী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার, বাসদের রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ।