ঘোপের হলিক্রিসেন্ট পাবলিক স্কুলের খামখেয়ালিপানা চরমে

যশোর শহরতলীর ঘোপ এলাকায় অবস্থিত হলি ক্রিসেন্ট পাবলিক স্কুল যা এক বছর আগেও এ এলাকার বাচ্চাদের জন্য অন্যতম সেরা স্কুল হিসেবে পরিচিত ছিল। অথচ অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে এ প্রতিষ্ঠানের সব যশ ভেস্তে গেছে। ওই স্কুলের অধ্যক্ষ ছবেদ আলী ওই স্কুলের এক শিক্ষার্থীর বাবা এম.আজমকে দায়িত্ব দিয়ে অন্য একটি মাদ্রাসায় যোগদান করেছেন। তিনি মাঝে মধ্যে স্কুলে আসেন যখন স্কুলে কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া আর কেউ থাকেনা। ফলে শিক্ষার্থী-অবিবাবকদের সাথে তার কোন সাক্ষাত মেলেনা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আমিনুর রহমান আসেন স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে অর্থাৎ বছরে একবার।

কোমলমতি বাচ্ছাদের নিয়ে এ স্কুলে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা নিয়ে কারো যেন কোনই মাথা ব্যাথা নেই। এ সুযোগে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আজম সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে পুজিকরে তাদের অভিবাবকের ঘাড় ভেঙ্গে খাচ্ছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তিনি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে সকলের সাথে যথেচ্ছাচার করছেন। এ কোচিং সে কোচিং, এ ফি সে ফি, এ টাকা সে টাকার উপর দৃঢ় নজর থাকলেও স্কুলের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের প্রতি তার কোনই নজর নেই। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান চরম খারাপের দিকে এগুচ্ছে বলে অভিবাবকদের অভিযোগ।

অভিবাবকরা বলেন, স্কুল থেকে শিক্ষার্থী হারিয়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটলেও এ বিষয়ে কোন ভ্রক্ষেপ নেই স্কুল কর্তৃপক্ষের। শুধু শিক্ষার্থী আর অভিবাবকই নয় স্কুলের শিক্ষিকাদের সাথেও তিনি অসাদচরণ করছেন।

নার্সারীর ছাত্র সাদিক মাহমুদের বাবা ডাক্তার আলমগীর কবীর জানান, দু’মাস আগে তার বাচ্চাকে স্কুলে রেখে তার স্ত্রী বাড়িতে আসেন। সাড়ে ১০ টায় স্কুল ছুটি হওয়ার আগেই তার স্ত্রী যেয়ে দেখেন স্কুলে সাদিক নেই। এবিষয় স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালে তারা কোনই পদক্ষেপতো নেনই না বরং তারা উল্টো কথা বলেন। বিষয়টি তার স্ত্রী তাকে জানালে বিভিন্ন জায়গায় খোজা খুজি শুরু হয়। কয়েকঘন্টা পর খুজে পায়।

তিনি বলেন, এ স্কুলে বাচ্চাদের প্রতি কোন দায়িত্বনেই। তারা মনগড়া স্টাইলে স্কুল চালান। ফলে এ ঘটনার পর থেকে তার বাচ্চাকে ওই স্কুলে আর পাঠাইনি।

এদিকে বাচ্চা হাড়ানোর বিষয় নিয়ে অন্যান্য অভিবাবকদের মধ্যে চরম ভয় ও আতংক কাজকরছে। শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা বলছেন, বাচ্চাদের প্রতি শুধু উদাসিনতাই নয় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আজমের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে স্কুলে পড়াশোনার মান খারাপ হতে শুরু করেছে। স্বজনপ্রীতি আর অতিমাত্রায় অর্থ উপার্জনের মনোভাব এর মুল অন্তরায় বলে তাদের ধারনা।

তারা বলছেন, স্কুলে নতুন করে কোচিং প্রথা চালু করেছে। নার্সারি থেকেই এ কোচিং বাধ্যতামুলক করেছেন। যা অভিবাবকদের কাছে গলার কাটায় পরিনত হয়েছে। প্রতি মাসে বাড়তি গুনতে হচ্ছে ৪শ’টাকা তাছাড়া এতে করে বাড়তি সময়ও তাদের অপচয় হচ্ছে বলে তারা জানান।

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরিচালকের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, সে এখন ঢাকাতে আছেন।

এবিষয়ে অধ্যক্ষ ছবেদ আলী বলেন, বিভিন্ন কারনে তিনি অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়েছেন কিন্তু এ স্কুলের উপর তার নজরদারী অব্যহত রয়েছে। স্কুলে কোচিং হচ্ছে ও সাম্প্রতি কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। সেক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়ী করেন তিনি। এবং অচিরেই অভিবাবক ও শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এম আজমের সাথে কথা বললে তিনি তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সব কথা তো আর মোবাইলে বলা যায়না। আপনি স্কুলে আসেন। তারপরেই না হয় আরো বিষয়ে কথা হবে।