যশোরের শার্শায় বানিজ্যক ভিত্তিতে ড্রাগন ফলের চাষ

বিদেশী দুস্প্রাপ্য ড্রাগন ফল বানিজ্যক ভিত্তিতে চাষ শুরু করেছে যশোরের শার্শার শিক্ষিত যুবক মনিররুজ্জামান। দক্ষিন শার্শার বসতপুর ১ নং কলোনির রসুলপুর গ্রামে পাকা রাস্তার পাশে ১২ বিঘা জমিতে আবাদ শুরু করেছে অধিক মুনাফা লাভের আশায় এ কৃষক।

মনিরুজ্জামান বলেন, দুস্প্রাপ্য এ গাছের ৬ হাজার পিছ চারা সে চৌাগাছার একটি খামার থেকে সংগ্রহ করেছে। প্রতি পিছ চারা সে ৩০/৪০ টাকা দরে ক্রয় করেছে। এ জাতীয় ফল গাছ লাগানোর ১২ থেকে ১৪ মাস পর ফল ধরা শুরু করে। দুস্প্রাপ্য এ ফল তার বাগানে প্রথম শার্শায় বানিজ্যক ভিত্তিতে চাষ করা হয়েছে। প্রতিটি চারার পিছনে ৭ থেকে ৮ শত টাকা ব্যায় হবে।

মনিরুজ্জামান তার বাগানে ইট সিমেন্টের তৈরী প্রতিটি খুটিতে ৪টি করে গাছ লাগিয়েছে। কর্মচারী পানি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা দিয়ে একটি খুটি প্রতি তার ৭ থেকে ৮ শত টাকা খরচ হয় ফল আসা পর্যন্ত। প্রতি খুটির মাথায় আবার টায়ার দিয়ে গাছ গুলোর ফলের ওজনে যাতে মাথা ভাঙ্গতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাছে ফল ধরা শুরু হয়েছে। প্রতিটি ফলের ওজন ২শ’ গ্রাম থেকে ৫ শ গ্রাম পর্যান্ত হয়। এবং প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে।

এ ধরনের ফল বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, নাটোর, যশোরের চৌগাছাসহ কয়েকটি জেলায় চাষ হচ্ছে।

মনিরুজ্জামান বলেন, সে মাদ্রাসা লাইন থেকে কামিল পাশ করেছে ( বাংলায় এম এ)। ভাল কোন চাকরি না পাওয়ায় সে নিজের ৪ বিঘা জমি এবং অন্যর আরো ৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বারো বিঘা জমিতে এ দুস্প্রাপ্য ফলের গাছ রোপন করেছে। এ গাছ বছরেরর যে কোন সময় রোপন করা যায়। প্রতিটি গাছের উচ্চতা ৭ ফুট লম্বা। এগাছ ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যান্ত ফল দেয়। গাছের নতুন নতুন ডালপালা গাজানোতে পুরাতন ডাল কেটে দিয়ে নতুন ডালে ফুল ফল আনতে হয়। গাছে ফল ধরার ৩০ থেকে ৩৫ দিনের ভিতর ফল পাকা শুরু হয়।

মনিরুজ্জামানের ১২ বিঘার বড় বাগানে দেখা যায় সে থাই জাতীয় মাত্র ২ ফুট উচ্চতার পেয়ারা গাছ লাগিয়েছে ড্রাগন গাছের ফাকে ফাকে। এ গাছে ও ব্যাপক পেয়ারার ফলন দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, এ জাতিয় পেয়ারার চারা রোপন করার পর মাত্র ৬ থেকে ৭ মাসের ভিতর ফল দেওয়া শুরু করে। তার এ বাগানে আড়াই হাজার পেয়ারা গাছ রয়েছে বলে জানায়।

জমির মালিককে কেমন দিতে হয় প্রতিবছরে এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রতিবছর বিঘা প্রতি জমির মালিককে ২০ হাজার করে টাকা দিতে হয়।

তিনি বলেন, এধরনের ফল গাছের চাষ করতে উচু জমির প্রয়োজন। যেখানে পানি জমে না সেই ধরনের জমি হলে চাষাবাদ করা যায়। এ জাতিয় ফলের চাষ বছরের যে কোন সময় শুরু করা যায়। এ গাছে বৈশাখ মাস থেকে একটানা আশ্বিন কার্তিক মাস পর্যান্ত ফল দিয়ে যায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি শার্শায় প্রথম বিদেশী দুস্প্রাপ্য ড্রাগন ফল ও থাই জাতিয় পিয়ারা চাষ করলে ও আমাকে পল্লী বিদ্যুৎ সেচের জন্য কোন লাইন দিচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুৎ বলছে আমাকে ইন্ডষ্ট্রিয়াল লাইন নিতে হবে। তাতে অনেক খরছ। আমি ইতিমধ্যে কৃষি অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবগত করিয়েছি।

তিনি বলেন, সরকার যদি এ ধরনের চাষাবাদে আমাদের পাশে দাঁড়ায় এবং উদ্বুদ্ধ করে তাহলে বেকারত্বের হার ও দেশে অনেক কম হবে।