নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জে উজ্জীবিত মাহমুদউল্লাহ

ওয়ানডে সিরিজে ধুঁকতে থাকা জিম্বাবুয়ে দলকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। দলে ইনজুরির কারণে ছিলেন না বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। তাঁর পরেও লিটন দাস এবং ইমরুল কায়েসের ফর্মে ফেরা, শেষ ম্যাচে সৌম্য সরকারের চমক এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের মতো পেস অলরাউন্ডারের খোঁজ পাওয়ায় এই সিরিজে বাংলাদেশ দলের অর্জন একটু বেশিই।

তবে আগামীকাল শনিবার সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। অষ্টম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে সিলেটের অভিষেক ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ নেতৃত্ব দিবেন টাইগারদের।

মাহমুদউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা ইতিবাচক ফলাফলের জন্য শতভাগ চেষ্টা করব। ওয়ানডে সিরিজের জয়ের আত্মবিশ্বাস টেস্টে কাজে লাগবে। আমরা কাউকে হালকাভাবে নিচ্ছি না। তারা শক্তিশালী দল এবং যেকোনো সময় ভালো খেলতে পারে। টেস্ট ক্রিকেটের মতো ফরম্যাটে একেকটি সেশন একেকটি চ্যালেঞ্জ। ছোট-বড় যেকোন অর্জনের জন্য আমরা মুখিয়ে থাকব।’

কিছুদিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল সফরকারী বাংলাদেশ। তবে সেই দুটি টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার কথা ভুলেননি মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের আশানুরূপ খেলতে পারিনি। সত্যি বলতে, আমরা বাজে খেলেছি। ঘরের মাঠে নিজেদের প্রমাণের এটি একটি সুযোগ। দক্ষতা দিয়ে প্রথম টেস্টে ভালো করতে পারলে সেই আত্মবিশ্বাস আমরা দ্বিতীয় টেস্টে নিয়ে যেতে পারব।’

জিম্বাবুয়ে সিরিজের পরই বাংলাদেশে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাঁদের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ, দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ এবং দুটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই এই টেস্ট সিরিজের প্রভাব পড়বে পরবর্তী ম্যাচগুলোয়। এই ব্যাপারে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘একটু দূরে চিন্তা করলে, সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ রয়েছে। ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভালো করা জরুরি। জিম্বাবুয়ে দুর্বল, বিষয়টি এমন নয়। আমরা ওয়ানডে সিরিজে ভালো খেলেছি এবং টেস্টেও এই ধারা অব্যহত রাখা উচিৎ।’

সাকিব এবং তামিমের অনুপস্থিতিতে টেস্ট দল নিয়ে খুব একটা পরীক্ষা করার ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব বেশি অপশন নিয়ে পরীক্ষা করব না টেস্টে। আমরা সবচেয়ে ভালো দল নিয়ে মাঠে নামব, কারণ যেকোন ফরম্যাটেই প্রথম ম্যাচ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এটা টুর্নামেন্টে দলের শারীরি ভাষা নির্ধারণ করে দেয়।আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, ভালোভাবে শুরু করলে সেই আত্মবিশ্বাস আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে।’

সাকিব না থাকায় সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে অধিনায়কত্ব দিয়েছে বিসিবি। তাই দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারটি চাপ হিসেবে না নিয়ে উপভোগ করছেন বলে জানালেন মাহমুদউল্লাহ। এটি তাঁকে উজ্জীবিত করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘প্রথমত, এটা অপ্রত্যাশিত ছিল, কারণ সাকিব একজন মূল খেলোয়াড় যে দলকে প্রেরণা দেয়। জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিতে ভালো লাগে, তবে একটু দায়িত্বও বেড়ে যায়। তবে অধিনায়কত্বের এই চ্যালেঞ্জই আমাকে সেরাটুকু দিতে উদ্বুদ্ধ করে। আমি সবসময় খেলোয়াড়দের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দিই, যেটা তাঁদের মধ্যে থেকে সেরাটুকু বের করতে সাহায্য করে।’

সাকিব না থাকায় আগামীকাল সিলেটে টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দিবেন মাহমুদউল্লাহ। তবে তিনিও টেস্টে জয় নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আত্মবিশ্বাসের রসদ যোগাড় করতে চান। আর কিছুক্ষণ পরেই ভক্তদের মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে ভক্তদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের তামিম-সাকিবহীন দল। এখন দেখার বিষয়, নিজেদের পরিকল্পনা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারেন মাহমুদউল্লাহ এবং রোডস।