ঘরোয়া ক্রিকেটের অনিয়ম রোধ করতে চান পাপন

এটাকে বিলম্বিত উপলব্ধি ছাড়া আর কিইবা বলা যায়! বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট বিশেষ করে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, প্রথম বিভাগ ও দ্বিতীয় বিভাগে আম্পায়ারিং বা খেলা পরিচালনার মান নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন, রাজ্যের সমালোচনা। পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং এবং মুখে চেনা কিছু দলকে সুবিধা দেয়ার ঢালাও অভিযোগ আছে।

বোর্ডের উচ্চ পদে থাকা কর্মকর্তাদের পরোক্ষ ইঙ্গিতেই আম্পায়াররা কখনও কখনও কোনো কোনো বিশেষ দলের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়ে খেলার ফলে প্রভাব বিস্তার করেন। এসব নিয়ে বিস্তর লেখালেখিও হয়েছে। অনেক ক্লাব কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। কাজের কাজ কিছু হয়নি।

তবে আশার খবর হলো, দেরিতে হলেও আম্পায়ারিং এবং ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যান্য অনিয়ম নিয়ে সরব হয়েছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে তার ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপে পাপন জানান, এবার সব অনিয়ম, ক্লাব কর্তৃপক্ষের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে ধীরে ধীরে কঠোর হবেন তিনি।

বিসিবি সভাপতির দাবি, আস্তে আস্তে অনিয়মগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। অনিয়ম নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম যখন আসি, বিপিএল নিয়ে ঝামেলা ছিলো। তা দূর করার চেষ্টা করেছি, মোটামুটি হয়েছে। প্রিমিয়ার ডিভিশন নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু লাস্ট টাইমে কোনো বিতর্ক হয়নি। ওটাও গেলো। আমাদের এখন আরো নিচে যেতে হবে; ফার্স্ট, সেকেন্ড ও থার্ড ডিভিশনে যাবো, জেলায় যেতে হবে। সব ঠিক করতে সময় লাগবে।’

ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে আম্পায়ারিং। এটা নিয়ে পাপনের মত, ‘এদিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। আম্পায়ারিং যদি ঠিক করতে পারি, তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর ক্লাবের ব্যাপার হলো, সবই আসলে ক্লাবভিত্তিক। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে তাদের দাপট থাকে। বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে, আম্পায়ারিং সুষ্ঠু হয়, যদি আমি শক্ত থাকি, বা ওরা যদি আমার কাছ থেকে সাহস পায়, তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

সামনের সময়ে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে পাপন বলেন, ‘এ ছাড়া আরো অনেক অভিযোগ আছে। যা দূর করা সহজ কাজ নয়। উন্নতি হচ্ছে, নিচের পর্যায়েও হবে। আরো তিন বছর যদি ক্রিকেটের সাথে থাকি, তাহলে কোনো জায়গায় ছাড় দেয়া হবে না। এগুলোর শেষ দেখে ছাড়বো।’

এ দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করা এত সহজ নয়। তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ক্রিকেট বোর্ডও এমনটাই ভাবতে চায়। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এখন দেখেন, দুর্নীতি অনেক জায়গায় থাকে। একদিনে সব ঠিক করা যাবে না। এগুলো ঠিক করতে হবে উপর থেকে। নিচ থেকে নয়। আমি সেভাবেই এগোনোর চেষ্টা করছি। আম্পায়ারিংও তেমনই। আউট না হলে যদি আউট দেয়া হয়, তাহলে তো হবে না। আম্পায়ারিং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমি যেটা বলতে চাচ্ছি। এখানে মল্লিক আছে, তারা জানে, আমি তাদের বসতে চাই। আমি নিখুঁত আম্পায়ারিং চাই। এটাই এখান থেকে যাওয়া প্রথম বার্তা হবে।’