রাজগঞ্জে স্বীকৃতির দাবিতে কথিত প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান তিন সন্তানের জননীর

রাজগঞ্জে তিন সন্তানের জননী এক প্রবাসীর স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে কথিত প্রেমিকের বাড়িতে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অবস্থান নেন। পুলিশ খবর পেয়ে সন্ধার দিকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়৷

মঙ্গলবার সকাল থেকে রাশেদা খাতুন লিপি নামে ওই গৃহবধূ তার প্রেমিক ফারুক হোসেনের বাড়িতে অবস্থান করেন। ফারুক তার কথিত দ্বিতীয় স্বামী। গত ২৬ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয় বলে দাবি করেন লিপি।

এদিকে, লিপি অবস্থান নেওয়ার পর ফারুকের বাড়ির লোকজন ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়েছেন। তারও আগে বাড়ি ছেড়েছেন কথিত স্বামী ফারুক।

স্থানীয়দের ভাষ্য, স্বামী রফিজুল ইসলাম মালয়েশিয়ায় থাকার সুবাদে গত দুই বছর ধরে ফারুকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন লিপি। এরপর ফারুকের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাকে পাঁচ লাখ টাকাও দিয়েছেন বলে জানান লিপি।

ফারুক মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের চালুয়াহাটি ইউনিয়নের ত্রিপুরাপুর গ্রামের আব্দুল গনি খাঁর ছেলে। সম্প্রতি তিনি লেখাপড়া শেষ করেছেন। আর লিপি খাতুনের বড় ছেলে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। এ ছাড়া মেয়ে ১৩ ও ছেলে ৯ বছরের আরও দুটি সন্তানের মা৷

ত্রিপুরাপুরে ফারুক হোসেনের বাড়িতে গেলে লিপি খাতুন বলেন, ২০১৩ সালে স্বামী রফিজুল মালয়েশিয়ায় চলে যান। এরপর ফারুকের সঙ্গে তার পরিচয়। ফারুক বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, গত ২৩ তারিখ রাতে স্বামী রফিজুলের বাড়িতে ফারুকের সাথে আমাকে একসাথে ধরে ফেলে বাড়ির লোকজন। বিষয়টি রফিজুল জানতে পারলে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর আমি ফারুকের বাড়ি এসে উঠি। গত ২৬ জানুয়ারি কেশবপুরে ফারুকের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে আমাকে বিয়ে করে সে। বিয়ের দুই-তিনদিন পর আমাকে বাপের বাড়ি হায়াৎপুরে জোর করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে মোবাইল বন্ধ রেখে ফারুক পালিয়ে যান। বাপের বাড়ি ঠাঁই না হওয়ায় স্বীকৃতির দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে ফারুকের বাড়িতে আসি। আমাকে দেখে ফারুকের বাবা আব্দুল গনি খাঁ ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়েছে।

লিপি দাবি করেন, ফারুক কোনো এক ডিপার্টমেন্টে উপ-সহকারী পদে চাকরি নেবেন বলে একসঙ্গে তার কাছ থেকে নগদ দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তাকে আরো তিন লাখের বেশি টাকা দিয়েছেন বলে দাবি এই প্রবাসীর স্ত্রীর।

স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত তিনি ফারুকের বাড়িতে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।
বাড়িতে কাউকে না পাওয়ায় ও ফারুক হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

এদিকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আশরাফুল ইসলাম লিপিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। এসআই আশরাফুল আলম লিপিকে হেফাজতে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।