যশোরের শেখহাটিতে যুবক খুনের ঘটনায় মামলা, চার আসামি আটক

যশোর শহরতলীর শেখহাটি আদর্শপাড়া, ভাটাপাড়ার জোড়া পুকুর এলাকায় দুদল যুবকের মধ্যে ছুরিকাঘাতে মামুন (৩২) নিহতের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। এঘটনায় এজাহার ভুক্ত চার আসামিকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের আটকের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রোববার বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন একথা বলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী,ও কোতয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন জানান, মামুন হত্যাকান্ডের ঘটনায় রোববার নিহত মামুনের মা মোছাঃ বকুল খাতুন বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩১। তারিখঃ ১০.০২.১৯। মামলায় ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হচ্ছে সাগর, ফয়সাল, ইমন, মঞ্জিল, সুমন, সুজন ওরফে ছোট সুজন, হৃদয়, খানজাহান, ও তামিম রেজা। আসামিদের সকলের বাড়ি শেখহাটি ও আশে পাশের এলাকায় বলে তিনি জানান।

এজাহার ভুক্ত আসামিদের মধ্যে সদর উপজেলার কচুয়াঘোপ গ্রামের আব্দুর সবুর খোকার ছেলে সুজন ওরফে ছোট সুজন (১৬) শেখহাটি খাঁ পাড়ার তাজু শেখের ছেলে তামিম রেজা (১৮) শেখহাটি জামরুলতলা আদর্শপাড়া ভাটার ভিতরে জোড়া পুকুরপাড়ের (বিএডিসি অফিসের পিছনে পূর্ব দিকে) রেজাউল ইসলামের ছেলে ফয়সাল (১৮) একই এলাকার হারুন শেখের ছেলে সুমন (১৬) কে শনিবার হত্যাকান্ডের রাতে সদর উপজেলার ঘোপ ছাতিয়ানতলা গ্রাম থেকে আটক করা হয়। এসময় পুলিশি উপস্থিতি টের পেয়ে সাগর পালিয়ে যায়। আটককৃত আসামিরা যশোর নড়াইল সড়কের ঘোপ ছাতিয়ানতলা গ্রামের সুজনের ভগ্নিপতির বাড়ি পালিয়ে ছিল। অন্য আসামিদের আটকের জন্য জোর পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের কারণ বলেছে।

আসামিদের দেয়া তথ্য মতে হত্যাকান্ডের কারণ উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন বলেন, শেখহাটি এলাকায় ছেলে মেয়েরা ঘুরতে গেলে সাগরের নেতুত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র তাদেরকে আটকিয়ে মুক্তিপন আদায় করে। নিহত মামুন ও আহত আরিফের বন্ধু সদর উপজেলার বিরামপুর কালিতলার মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে বাপ্পা তার এক বান্ধবীকে নিয়ে শেখহাটি আদর্শপাড়া জোড়াপুকুরে ঘুরতে গেলে সংঘবদ্ধ চক্রটি তাদের আটকিয়ে মুক্তিপন দাবি করে। এবিষয়টি নিয়েই শনিবার সন্ধ্যায় শেখহাটি আদর্শপাড়া জোড়াপুকুরপাড়ে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
সংঘবদ্ধ চক্রের হাত থেকে ছাড়া পেতে বাপ্পা তার বন্ধু নিহত মামুন,ও আরিফদের ফোন দেয়। বাপ্পার ফোন পেয়ে মামুন ও আরিফ ঘটনা স্থলে গেলে তাদের সাথে আদর্শ পাড়া জোড়াপুকুর পাড়ের বাসিন্দা হারুন শেখের ছেলে সাগর, ফয়সাল, সুমন, সুজনদের বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে উভয়ে একে অপরকে ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনা স্থলেই আব্দুল্লাহ আল মামুন নিহত হয়। আহত হয় আরিফ ও ঠেকাতে যেয়ে প্রধান আসামি সাগরের মা শেফালি। আহত আরিফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য নিহত মামুন (৩২) গোপালগঞ্জ বর্নিগ্রামের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে। বর্তমানে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোড বাবলাতলার রবিউল ইসলাম মনির বাড়ির ভাড়াটিয়া। পেশায় শহরের জেস টাওয়ারের মোবাইল মেকানিক।

এদিকে শেখহাটি আদর্শপাড়া জোড়া পুকুরপাড়ে যুবক হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মুমেলকে জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সদর উপজেলা শাখা। রোববার সংগঠনের আহবায়ক রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা এই প্রতিবাদ জানান।