নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার খরচের টাকাও তুলতে পারেননি মোজাম্মেল

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টসার্সের আল নূর মসজিদে নিহত চাঁদপুরের মোজাম্মেল হক সেলিমের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রতিবেশী ও স্বজনদের দাবি দ্রুত যেন লাশ দেশে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত মঙ্গলবার স্বজনদের সঙ্গে শেষ কথা বলেছিলেন মোজাম্মেল।

স্থানীয় চেয়ারম্যানের দাবি, নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার খরচের টাকাও তুলতে পারেননি মোজাম্মেল। সরকারি সহায়তার দাবিও তুলেন তিনি।

জানা যায়, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাঁদেরগাও ইউনিয়নের হুরমহিষা মিয়াজী বাড়ির মৃত হাবিবুল্লাহ মিয়াজির কনিষ্ঠ্য ছেলে মোজাম্মেল হক সেলিম (৩০)। তিন ভাই দুইবোনের মধ্যে মোজাম্মেল সবার ছোট। গত চার বছর আগে স্বপ্নের দেশ নিউজিল্যান্ডে গেলেও আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে দেশে আসার কথা ছিল তার।

মা জামিলা খাতুন একপ্রকার বাকরুদ্ধ। সবশেষ কথা হয়েছিল মঙ্গলবার। প্রতি শুক্রবার ছেলে ফোন করে কথা বলেন। মা সন্তানের ফোনকলের অপেক্ষায় থাকলেও আর কখনো এ অপেক্ষা ফুরাবে না।

বড় ভাই শাহাদাত হোসেন ও আবদুল মালেক জানান, মোজাম্মেল আমাদের সবার আদরের ছোট ভাই। তাই তার ইচ্ছে মতো পড়ালেখা করানো হয়েছে। ঢাকার মার্কস মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে দন্তচিকিৎসকের ডিগ্রি নিয়ে ২০১৫ সালে চলে যান নিউজিল্যান্ডে। শুক্রবার বন্ধু মজিবুর রহমানসহ নামাজ পড়তে যান ওই মসজিদে। বন্দুকধারীর হামলার সময় বন্ধু মজিবুর পালাতে পারলেও মোজাম্মেল পারেনি।

তারা জানান, একদিন পর সেখানকার একটি হাসপাতালে তার লাশ পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে ফোন করে জানায় মজিবুর।

প্রতিবেশি রাকিব হাসান ও আজহারুল ইসলাম মিয়াজী জানান, অগ্রণী ব্যাংক নারায়নপুর ব্র্যাঞ্চ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছোট ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করা হয়েছিল। মোজাম্মেল খুব ভালো ছেলে ছিল। অন্তত তার লাশ যেন দেশে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

খাঁদেরগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন এ পরিবারটি যেন সরকারিভাবে সহায়তা পায় তার দাবি জানান।