ভারি আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রিতে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার নীতিমালা চাইবে বাংলাদেশ

সারা বিশ্বে বেসরকারি খাতে মেশিনগানের মতো ভারি আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য জাতিসংঘের নীতিমালা চাইবে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক।

এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশি নাগরিকদের অবস্থান ও ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার।

ভারি অস্ত্রের বিষয়ে ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেও স্কুলে, শপিংমলে ও ক্লাবসহ বিভিন্ন জায়গায় অটোমেটিক গান দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়। তাই এ ধরনের ভারি অস্ত্র বিক্রি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আমরা একটি বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার চিন্তাভাবনা করেছি।

এ ব্যাপারে জাতিসংঘের মাধ্যমে একটি রেজুলেশন নেয়ার চেষ্টা করব। যাতে বিশ্বব্যাপী ভারি অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে সবাই সতর্ক হয়।

ক্রাইস্টচার্চে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হল।

একে আবদুল মোমেন বলেন, ক্রাইস্টচার্চে বর্তমানে ১৫০ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ মেইনটেন করছি। সন্ত্রাসী হামলার পর বাংলাদেশ সরকার দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং দেশটিতে ভ্রমণে বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে।

তিনি বলেন, এর আগে নিউজিল্যান্ড সরকার তথ্য দেয়নি। বর্তমানে তারা তথ্য দেয়া শুরু করেছে। ওই হামলায় এ পর্যন্ত ৫ বাংলাদেশি মারা গেছেন।

তারা হলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আবদুস সামাদ, সিলেটের ফরিদ আহমেদের স্ত্রী হোসনে আরা আহমেদ, চাঁদপুরের ড. মোজাম্মেল হক, নরসিংদীর জাকারিয়া ভূঁইয়া এবং নারায়ণগঞ্জের ওমর ফারুক।

এর মধ্যে ড. আবদুস সামাদের বড় ছেলে সেখানে যাবেন এবং তাকে সেখানে কবর দেয়া হবে। আরও একজনকে সেখানে কবর দেয়া হবে। বাকিদের ব্যাপারে এখনও পুরোপরি তথ্য পাওয়া যায়নি।

আহতদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের লিপি নামে একজন মহিলা গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। ইতিমধ্যে তার দুটি অপারেশন হয়েছে। আরও একটি অপারেশন হবে। তবে তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। পায়ে গুলিবিদ্ধ মুহতাসিম ও শেখ হাসান রুবেলের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। এছাড়া আরও একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিহতদের প্রতিটি পরিবারের একজন সে দেশে যেতে পারবেন বলেন নিউজিল্যান্ডের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার কাছে মরদেহ হস্তান্তর করবে এবং মরদেহ দেশে আনার ক্ষেত্রে সে দেশের সরকার সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, অল্পের জন্য বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। তাদের নূর মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করার কথা ছিল। অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তায় বিশেষ নিরাপত্তায় বাংলাদেশ টিম ইতিমধ্যে দেশে ফিরেছে।

তিনি বলেন, বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মোহাম্মদ ওয়ালিদ বিন কাশেম নামে একজন সহকারী সচিবকে ফোকাল পয়েন্ট অফিসার (মুখপাত্র) করা হয়েছে। প্রবাসীরাও উনার কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন।

মন্ত্রী বলেন, নিউজিল্যান্ডের মতো শান্তিপ্রিয় একটি দেশে এ ধরনের হামলা সবার জন্য দুঃখজনক। আমরা শুধু এর প্রতিবাদই করিনি, দেশটির সরকারকে এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার জন্য বলেছি।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, কঠিন ধরনের মারণাস্ত্রগুলো বেসরকারি কারও হাতে দেয়ার আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত। সামরিক বাহিনী ছাড়া অন্য কাউকে এটি দেয়া উচিত নয়।