এশিয়ায় একীভূত হচ্ছে টেলিনর ও আজিয়াটা

মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিনর ও আজিয়াটা গ্রুপ এশিয়ায় একীভূত হচ্ছে। সোমবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, এশিয়ায় নিজেদের অবকাঠামোর পারস্পরিক ব্যবহার করবে প্রতিষ্ঠান দুটি। তবে শেয়ারের সিংহভাগ থাকবে টেলিনরের। দুই প্রতিষ্ঠান যুক্ত হওয়ার পর নতুন নাম হবে মার্জকো।

টেলিনর ও আজিয়াটা গ্রুপ উভয়েই বাংলাদেশে সক্রিয়। বাংলাদেশের শীর্ষ দুই মোবাইল কোম্পানির মালিকানার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে নরওয়ে ও মালয়েশিয়ার এ দুই কোম্পানির হাতে। দেশের বৃহত্তম মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীনফোনের মালিকানা নরওয়ের কোম্পানি টেলিনরের। আর রবির মালিকানা রয়েছে মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান আজিয়াটার কাছে। এই আলোচনা চূড়ান্ত রূপ পেলে এশিয়ায় দুই কোম্পানির টেলিকম ব্যবসা ও অবকাঠামো মিলিয়ে নতুন একটি কোম্পানি গঠন করা হবে।

দুই গ্রুপের মধ্যে কোনও আর্থিক লেনদেন হবে কি না; তা এখনও নিশ্চিত নয়। এশিয়ার ৯ দেশের ১০০ কোটি মানুষের মাঝে নিজেদের ব্যবসা বিস্তার করার লক্ষ্যে এক হচ্ছে প্রতিষ্ঠান ‍দুটি। এক হয়ে যাওয়ার পর তাদের গ্রাহক সংখ্যা হবে ৩০ কোটি। তারা হবে এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান যাদের ৬০ হাজার নেটওয়ার্ক টাওয়ার থাকবে। সদর দফতর হবে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে।

টেলিনর গ্রুপের চেয়ারম্যান গান ওয়ারেস্টেড বলেন, ‘আমরা জানাতে চাই যে, এশিয়ায় টেলিনর ও আজিয়াটা এক হওয়ার পরিকল্পনা করছে। এশিয়ার সেরা টেলিকম সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’

দুই কোম্পানি একীভূত হওয়ার মাধ্যমে তাদের সমন্বিত সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে। ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের পথও সুগম হবে। দাম বাড়বে শেয়ারহোল্ডারদের।

মালয়েশিয়াসহ এশিয়াজুড়ে প্রযুক্তির রূপান্তর ও ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিত করতে সক্রিয় ভূমিকা নেবে মার্জকো। ফাইভ জি, ইন্টারনেট অফ থিংস এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর উন্নয়নে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গবেষণা ও উদ্ভাবন কেন্দ্র স্থাপনেরও পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

টেলিনর গ্রুপের চেয়ার গান ওয়ারস্টেড বলেন, আজ আমরা ঘোষণা করি যে, বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল ও উদ্ভাবনী অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি এশিয়ায় টেলিনর ও আজিয়াটা-র একীভূত হওয়ার বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। একসঙ্গে আমরা একটি সমৃদ্ধ ও সুনির্দিষ্ট বৈচিত্র্যময় প্যান-এশিয়ান টেলিকম এবং অবকাঠামো সংস্থা তৈরি এবং শক্তিশালী আঞ্চলিক অপারেটর হওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। টেলিনরের কৌশল হচ্ছে নরডিক ও এশীয় অঞ্চলে আমাদের মূল টেলকো সম্পদের বিকাশ ঘটানো। আমাদের বোর্ড ও ম্যানেজমেন্টই এই একীভূতকরণের কৌশল নিয়েছে।

টেলিনর গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিগভে ব্রেক বলেন, নয়টি দেশে শক্তিশালী আঞ্চলিক অপারেশন এবং ৩০০ মিলিয়ন গ্রাহকের কাছাকাছি থেকে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ টেলিকম প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হবে। আমার এই আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে, এতে করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য উল্লেখযোগ্য মান তৈরি হবে এবং এটি আমাদের গ্রাহকদের উপকারী হবে।

এশিয়ায় থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মিয়ানমারে টেলিনরের ব্যবসা রয়েছে। অন্যদিকে মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় ব্যবসা রয়েছে আজিয়াটার। তবে বাংলাদেশে আজিয়াটার মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার ব্যবস্থাপনায় স্বতন্ত্রভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। প্রস্তাবিত লেনদেনে টেলিনর গ্রুপের আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছে সিটি।