মিয়ানমারে ফের বিমান দুর্ঘটনা, বাঁচল ৮৯ আরোহীর প্রাণ

রানওয়ে থেকে ছিটকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মিয়ানমারে আরেকটি বিমান দুর্ঘটনায় পড়েছে।

তবে পাইলটের দক্ষতায় এবার রক্ষা পেল বিমান ও এর ৮৯ আরোহী।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও ডেইলি মেইল খবর দিয়েছে, রোববার সকালে মান্দালয় বিমানবন্দরে দেশটির বিমান সংস্থা মিয়ানমার ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের সামনের চাকা ছাড়াই পাইলট নিরাপদে রানওয়েতে অবতরণে সক্ষম হয়েছেন।

এক সপ্তাহের মধ্যে দেশটিতে বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় বিপর্যয়ের ঘটনা। এর আগে গত ৮ মে ইয়াঙ্গুনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমান অবতরণের সময় প্রচণ্ড বাতাসের কারণে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। এতে পাইলট-ক্রুসহ আহত হন কমপক্ষে ১৭ আরোহী।

স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে মান্দালয় বিমানবন্দরে এমব্রায়ার-১৯০ মডেলের বিমানটি (ইউবি-১০৩ ফ্লাইট) অবতরণ করে। যান্ত্রিক ত্রুটি সত্ত্বেও তা সফলভাবে অবতরণে সক্ষম হন পাইলট।

এতে কেউ আহত হননি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সম্ভবত আগুন ধরে গিয়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা নিভে যায়।

মিয়ানমারের পরিবহন ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব উইন খান্ত বলেন, ‘পাইলট বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি মহৎ কাজ করেছেন। তবে কেন এমন হয়েছে, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

মিয়ানমার ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে বলেছে, বিমানটি ইয়াঙ্গুন থেকে উড্ডয়ন করে। সেখান থেকে মধ্যাঞ্চলীয় মান্দালয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু, অবতরণের সময় সামনের ল্যান্ডিং গিয়ার প্রসারণ করাতে সক্ষম হচ্ছিলেন না পাইলট ক্যাপ্টেন মিয়াত মোয়ে অং।

এ সময় তিনি দু’বার ওই বিমানবন্দরের ওপর দিয়ে চক্কর দেন, যাতে ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা চেক করতে পারেন যে নিচে ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ করছে কিনা। এরপর ক্যাপ্টেন জরুরি অবতরণের পদ্ধতি অবলম্বন করেন।

তিনি সবটুকু জ্বালানি পুড়িয়ে ফেলেন, যাতে অবতরণের সময় বিমানের ওজন কমে যায়।

এই বিমানটি অবতরণের দৃশ্য সম্বলিত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, বিমানটির রিয়ার হুইলগুলো আগে মাটি স্পর্শ করে। তারপর খুব আস্তে আস্তে নোজ বা সামনের অংশ মাটিতে নেমে আসে। বিমানের নোজ বা মাথা রানওয়ে স্পর্শ করে কিছু দূরত্ব অতিক্রম করে। এ সময় তাতে ধোঁয়া দেখা দেয়। অল্পক্ষণের মধ্যেই তা থেমে যায়। তারপর থেকেই ক্রুরা জরুরি উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।

আরেকটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে কেবিন ছাড়াও যাত্রীদের পায়ের কাছে ধোঁয়া দেখা গেছে। ধোঁয়ায় দম বন্ধের উপক্রম হলে যাত্রীরা জরুরি বহির্গমন গেট দিয়ে বের হতে থাকেন।

বিমানের যাত্রী সোয়ে মোয়ে বলেন, ‘আমরা যখন অবতরণ করলাম, সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়া লক্ষ্য করলাম। ভয় পেয়ে গিয়েছিল কিন্তু, সবাই নিরাপদে আছেন।’

এমব্রায়ারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এ ধরনের বিমানের আসন সংখ্যা ৯৬ থেকে ১১৪।

এর আগে ২০১৭ সালে আন্দামান সাগরে বৈরি আবহাওয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হলে ১২২ জন নিহত হন।