গ্রামবাসীর সাথে দুর্ব্যবহার, তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ যশোরের চাঁনপাড়া ফাড়ির এএসআই

দুই চোর আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের দুর্ব্যবহারে ক্ষুদ্ধ হয়ে যশোরের চাঁনপাড়া ফাড়ি পুলিশের টুআইসি রিয়াজুল ইসলাম নামে এক এএসআইকে প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে গ্রামবাসী। সোমবার সকালে যশোর সদর উপজেলার চাঁনপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে কোতয়ালি থানা পুলিশ যেয়ে ক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করে অবরুদ্ধ এএসআই রিয়াজুল ইসলামকে উদ্ধার করে আনে।

আটক দুই চোর হচ্ছে যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লিটন মোল্লার ছেলে আশিক (২২) ও নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নাড়িয়া মাইমুনেরচর গ্রামের মৃত আমিরুদ্দিন মোল্লার ছেলে হাবিবুর (৩৫)।

গ্রামের বাসিন্দা ইমামুল হোসাইন জানান, চাঁনপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন বাবুলের বাড়িতে রাত দুইটার দিকে দুই চোর প্রবেশ করে। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাদের আটক করে। তাদের চিৎকার চেচামিতে গ্রামবাসিও ওই বাড়িতে জড়ো হয়। এসময় বাড়ির লোকরা স্থানীয় চাঁনপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন দিয়ে চোর আটকের খবর জানায়। তবে পুলিশ ওই সময় না এসে সকাল সাতটার দিকে ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশের দেরিতে আসা নিয়ে গ্রামবাসী অভিযোগ করলে ফাড়ির টুআইসি এএসআই মিরাজুল গ্রামবাসীর সাথে দুর্ব্যবহার ছাড়াও মহিলাদেরকে গালিগালাজ করে। এতে গ্রামবাসি উত্তেজিত হয়ে টুআইসি রিয়াজুলের প্রতি মারমুখি হয়ে উঠে। এছাড়াও এএসআই রিয়াজুল এ ফাঁড়িতে যোগ দেয়ার পর বিভিন্ন সময় অনেক গ্রামবাসীকে মিথ্যা মাদক মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন ভাবে গ্রামবাসীকে হয়রানি করতো। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। ওই সময় রিয়াজুল আমজাদ হোসেন বাবুলের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরিস্থিতি খারাপ দেখে বাবুলের বাড়ির লোকজন বাড়ির গেট বন্ধ করে রাখে। গ্রামবাসী বাবুলের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে।

আমজাদ হোসেনের ছেলে আবু বক্কার জানান, রাত দুইটার দিকে আমাদের বাড়িতে দুই চোর ঢোকে। টের পেয়ে আমরা ওই দুই চোরকে ধরি। এরপর তাদের কাছ থেকে ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়। আমরা ধরার পর পরই চানপাড়া পুলিশকে খবর দিই। কিন্তু তখন পুলিশ আসেনি। সকালে ৭টার দিকে ফাঁড়ির টুআইসি রিয়াজুল সিভিল ড্রেসে আমাদের বাড়ি আসেন। এসময় গ্রামের লোকজন দেরিতে আসা নিয়ে অভিযোগ করলে রিয়াজুল গ্রামবাসীকে গালিগালাজ করে। এতে গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়লে আমরা রিয়াজুল দারোগাকে বাড়ির ভিতরে রেখে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসিকে শান্ত করার চেষ্টা করি। পরে থানা থেকে পুলিশের একজন ওসি এসে ঘটনার ব্যাপারে যথাযত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে জনগনকে শান্ত করে দারোগাকে নিয়ে যান।

ঘটনার বিষয়ে টুআইসি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনাস্থলে আটক চোরদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কিন্তু কোন গ্রামবাসীর সাথে দুর্ব্যবহার করিনি।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া ওসি (তদন্ত) সমীর কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। জনগণের সাথে পুলিশের বিরোধের সুযোগ নেই। ঘটনার বিষয়ে আমরা এখন কোন বক্তব্য দেব না। ঘটনার তদন্ত করে উর্দ্ধতন কর্মকতাদের বিষয়টি জানাবো।