টেন্ডারবাজদের পক্ষে যমেক কতৃপক্ষ, সিডিউল কিনতে পারেননি ঠিকাদাররা

jessore medical collage hospital

যশোর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও টেন্ডারবাজদের পক্ষে অবস্থান নেয়ার কারণে চার গ্রুপ উন্নয়ন কাজের সিডিউল কিনতে পারেননি প্রকৃত ঠিকাদাররা। ফলে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ কৌশল হিসেবে বন্ধের দিন সিডিউল বিক্রির শেষ তারিখ নির্ধারন করেছে বলে ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন।

ঠিকাদারদের অভিযোগে জানা গেছে, যশোর মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন টেন্ডারবাজদের পক্ষে অবস্থান নেয়ার কারণে তিনি ঈদের আগে ও পরে বন্ধের দিন ৮ জুন সিডিউল বিক্রির শেষ দিন নির্ধারণ করেন। গত ৯ মে যশোর মেডিকেল কলেজের চার গ্রুপ কাজের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কাজ গুলি হচ্ছে ফার্নিচার, মেডিকেল মেশিনারি, কম্পিউটার এবং এ্যক্সেসরিজ, ও মেডিকেল এবং সাজারি সাপ্লাইজ (এম.এস.আর)। টেন্ডার ক্লোজিং তারিখ ৯ জুন বেলা ১২ টা। টেন্ডার খোলা হবে একই দিন দুপুর দুইটায়। মেডিকেল কলেজ ছাড়াও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে টেন্ডার জমা দেয়া যাবে। প্রতিটি সিডিউলের মূল্য ১৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যাংক চালানের মাধ্যমে এই টাকা জমা দিয়ে সিডিউল কিনতে হবে। অথচ ৮ জুন শনিবার ব্যাংক বীমাসহ সরকারি বেসরকারি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর আগে ৪ জুন শনিবার থেকে সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঈদের ছুটিতে বন্ধ হয়ে যায়। তার আগে ১ জুন শনিবার সরকারি ছুটি ও ২ জুন রোববার ২৭ শে রমজানের ছুটি থাকে। ফলে পুরো সাত দিন সরকারি ছুটির বন্ধের কারণে ব্যাংক বীমা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঠিকাদাররা ব্যাংক চালান করতে না পারায় সিডিউল কিনতে পারেননি।

ঠিকাদাররা অভিযোগে বলেছেন, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন টেন্ডারবাজদের কাজ পাইয়ে দেয়ার সুবিধার্থে পরিকল্পিত ভাবে বন্ধের দিন সিডিউল বিক্রির শেষ দিন ধার্য করেছেন। ফলে বন্ধের দিন সিডিউল বিক্রি হওয়ায় ঠিকাদাররা সিডিউল কিনতে না পারায় সরকার মোটা অংকের টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। একই সাথে সরকারের উন্নয়ন কাজে বাধার সৃষ্টি হযেছে। পাশাপাশি প্রকৃত ঠিকাদাররা সিডিউল কিনতে না পারায় কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। আর তার একাজে সহোযোগিতা করছেন মেডিকেলেজের হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পালনকারি জয়নাল আবেদিন। এর আগে জয়নাল আবেদিন ছিলেন শহরের বকচরের ইলেকট্রো মেডিকেল ওয়ার্কসপের স্টোর কিপার। সেখান থেকে তিনি মেডিকেল কলেজের হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব নিলেন।

সরকারি চাকুরি বিধি মালার ১৪৩ ধারা অনুযায়ি স্টোর কিপার থেকে হিসাব রক্ষক হওয়ায় কোন নিয়ম নেই। তারপরও জয়নাল আবেদিন কিভাবে স্টোর কিপার থেকে হিসাব রক্ষক হলেন এবিষয় নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

বন্ধের দিন সিডিউল বিক্রির বিষয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমরা ২১ মে থেকে সিডিউল বিক্রি করছি। সিডিউল বিক্রির জন্য ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে। এরপরও ঠিকাদাররা কিনতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।

এদিকে ৩০ মে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ সিডিউল কিনতে গেলে তাদেরকে সিডিউল না দেয়ায় মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন লাঞ্চিত হন। এবিষয়ে অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন পুলিশ সুপারকে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। পরে ১ জুন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মেডিকেল কলেজে যেয়ে ঘটনার মীমাংসা করেন।