ফ্যানদের কাছে ক্ষমা চাইলেন বোল্ট

১৪ জুলাই লর্ডসের ফাইনালকে বলা হচ্ছে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ম্যাচ। ওই ম্যাচের শিহরণ ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে বহুকাল থাকবে। তবে নিউজিল্যান্ডবাসীর কাছে ওই ম্যাচ আশাভঙ্গের বেদনা। আর সবার আশা ভেঙে দেওয়ার জন্য ইংল্যান্ড থেকে দেশের মাটিতে পা দিয়েই কিউই ফ্যানদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিউই ক্রিকেটারদের প্রথম দলটি অকল্যান্ড পৌঁছে।

শিরোপা হারানোর যন্ত্রণার কথা বিমানবন্দরে পা দিয়েই জানান বোল্ট, ‘অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরেছি; কিন্তু হারটা এখনও মাথা থেকে যায়নি। একদিন হয়তো আমরা সবাই ওই দুঃস্মৃতি পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াব। তবে এটা এমন একটা বিষয়, যা হয়তোবা আমরা দীর্ঘদিন ভুলতে পারব না।’

বোল্ট জানান, শেষ ওভারে মার্টিন গাপটিলের থ্রো বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে সীমানার বাইরে চলে যাওয়া ইংল্যান্ডের পাওয়া সেই ‘বিতর্কিত ছয়’ রান প্রতিনিয়ত তাকে বিদ্ধ করে চলেছে।

ঘটনাবহুল ওই ফাইনালে কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকাদের একজন হলেন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৫০তম ওভারটি এবং সুপার ওভারটিও তিনি বোলিং করেন। ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়া বেন স্টোকসের একটি ক্যাচও ইনিংসের শেষ দিকে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পারায় তার পা রাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করে। ফলে আউটের বদলে ছয় পেয়ে গিয়েছিলেন স্টোকস। তখন ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৯ বলে ২২ রান। স্টোকসের ওই ক্যাচ ধরতে পারলে ম্যাচ কিউইদের পকেটেই চলে আসত। তবে দু’বার খেলা টাই হওয়ার পর বাউন্ডারি বেশি মারায় স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। বাউন্ডারি লাইনে এমনিতে দারুণ সব ক্যাচ ধরায় সিদ্ধহস্ত বোল্ট।

স্টোকসের ওই ক্যাচের সময় তার পা বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করে ফেলায় সব সমালোচনা মাথা পেতে নিতে রাজি তিনি, ‘ম্যাচের এমন অবস্থায় এমন একটি ক্যাচ মিস করলে সমালোচনা হওয়াটা তো স্বাভাবিক। বাউন্ডারির দড়িটা কোথায় সেটা মাথায় না থাকা অবশ্যই সম্পূর্ণ আমার ভুল। তবে ছোট ছোট কিছু বিষয়ের কথা ভেবে অবাকই লাগছে, কীভাবে বিষয়গুলো ম্যাচকে অন্য এক জায়গায় নিয়ে গেল। তবে শেষ ওভারটা কোনোভাবেই মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছি না। যেভাবে হোক এই প্রথম আমি মাটিতে গড়ানো শটে ছয় খেলাম। স্কোর লেবেল (সুপার ওভার শেষে) দেখার পরও হেরে যাওয়াটা সত্যিই অদ্ভুত!’

এমন কঠিন অবস্থায় যারা তাদের সমর্থন জানিয়েছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ বোল্ট, ‘আমরা প্রায় ১৫ ঘণ্টার মতো বিমানে ছিলাম। তখন অনেক কিউই আমাদের কাছে এসে বলেছে যে, তারা আমাদের পাশে আছে। আমি সত্যিই জানি না তাদের উদ্দেশে কী বলা উচিত। শিরোপা হারানোর যন্ত্রণা অবশ্যই আমাদের সবাইকে কুরে কুরে খাচ্ছে। সবার আশা ভেঙে দেওয়ার জন্য আমি দুঃখিত। এখন আমি বাড়ি গিয়ে আমার কুকুরটাকে পাশে নিয়ে সমুদ্রসৈকতে হাঁটতে চাই, সবকিছু ভুলে যেতে চাই।’ এমন স্মৃতি কি ভোলা যায়!