সোনভদ্র হত্যাকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তবে সোনভদ্রে গিয়ে নয়, সারারাত তিনিসহ কংগ্রেস নেতারা যেখানে আটক থাকলেন, সেই মির্জাপুরে চুনার গেস্ট হাউসেই নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হয় প্রিয়াঙ্কার।
সোনভদ্রে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে তাকে দেখা করার বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের অনুমতি না পেয়ে রাতভর চুনার গেস্ট হাউসেই অবস্থান করেন প্রিয়াঙ্কা। শনিবার সকালে পুনরায় তিনি দলবল নিয়ে সোনভদ্র যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এবারও তাকে যেতে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এরই মধ্যে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে দেখা করতে চুনার গেস্ট হাউসের সামনে হাজির হন নিহতদের কয়েকটি পরিবার। তাদের সঙ্গে অবশ্য দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয় প্রিয়াঙ্কাকে।
নেত্রীকে সামনে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রিয়াঙ্কা। সেই সঙ্গে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন যোগী সরকারের বিরুদ্ধে। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘জানি না এদের কী মানসিকতা।’
প্রিয়াঙ্কা অভিযোগ করেন, আক্রান্তদের পরিবারের ১২ সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও মাত্র দুইজনকে তার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। বাকি ১০ জনকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি প্রিয়ঙ্কা তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে, সেই অনুমতিও দেওয়া হয়নি।
এর আগে শুক্রবার বারাণসী বিমানবন্দরে নেমে প্রিয়াঙ্কা আহতদের দেখতে যান বিএইইউ ট্রমা সেন্টারে। এরপর সোনভদ্রে রওনা দেন নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। কিন্তু মির্জাপুরে মাঝপথেই তাকেসহ কংগ্রেস নেতাদের আটকে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় সেখানেই ধরনায় বসেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সে সময় তিনি বলেন, ‘নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। মাত্র ৪ জন নিয়ে দেখা করতে যাওয়ার কথা পুলিশকে বলা হয়। প্রশাসন এরপর বাধা দেয়। কেন তাদেরকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না ব্যাখ্যা দিতে হবে প্রশাসনকে। না হলে এখানেই ধরনায় বসা হবে।’
পরে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে সেখান থেকে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়। সেখান থেকে চুনার গেস্ট হাউসে নেওয়া হয় তাদের। পরে সেখানেই রাত কাটান প্রিয়াঙ্কা।
এদিকে শনিবার সকালে বারণসী বিমানবন্দরে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দলকেও আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুনীল মণ্ডল ও আবীর বিশ্বাসের ওই তিন সদস্যের দলটি শনিবার নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু যোগীর রাজ্যে পা দিতেই তাদের আটক করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সোনভদ্রে ৩৬ একরের একটি জমিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান ২০০ জন লোক ও ৩৬টি ট্রাক্টর নিয়ে ওই জমিতে চাষ দিতে যান। এতে বাধা দেন এলাকার উপজাতিরা। ক্ষিপ্ত হয়ে গুলি চালিয়ে দেন পঞ্চায়েত প্রধানের লোকজন। এতে ১০ জন নিহত ও ২৪ জন গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানকে। সূত্র: জিনিউজ