সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পে রাবি’র পাঁচ ভাস্কর্য

রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র পদ্মার কোল ঘেঁষে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে মতিহারের সবুজ চত্বরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস অবস্থিত। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ ক্যাম্পাসের মূল ফটক পেরিয়ে সবুজ বৃক্ষে আচ্ছন্ন করে আকর্ষণে বাড়িয়ে দিয়েছে এক নতুন মাত্রা।

এ ক্যাম্পাসের বিশেষ আকর্ষণ প্যারিস রোড, সাবাস বাংলা মাঠ, শহীদ মিনার, মসজিদ, বুদ্ধিজীবী চত্বর, বধ্যভূমি, সিনেট ভবন, সাত পুকুরসহ নানা ব্যতিক্রমী স্থাপনা। আর এই ব্যতিক্রমী এ স্থাপনাগুলোকে ঢেলে সাজানোসহ নতুন করে পাঁচটি ভাস্কর্য স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো. জাকারিয়া।

ভাস্কর্যগুলো ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার নির্দেশনায় ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. রকীব আহমেদ ও মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ.কে.এম আরিফুল ইসলামের সহযোগীতায় শাহিদ এন্ড ব্রাদার্স কোম্পানির আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে তিনটি ভাস্কর্যের নির্মান কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকি দুইটির কাজ খুব দ্রুতই শুরু হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এসব ভাস্কর্য নির্মানের কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পশ্চিম দিকে নির্মাণ করা হয়েছে একটি ‘ওয়েবসাইট’ ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটি (ৎঁ.ধপ.নফ) ঠাই পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে একটু এগিয়ে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে নির্মিত হয়েছে আরো একটি ভাস্কর্য। যেটি হলো ‘বই’ ভাস্কর্য। উন্নত বিদ্যাপীঠের নির্দেশক হিসাবে এটি পরিচিতি পেয়েছে। পাশাপাশি ড. মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা এবং স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ঠিক মাঝে স্থাপিত হয়েছে একটি ‘কিউব’ ভাস্কর্য।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে নির্মিত হবে একটি ‘বইয়ের স্তুপ’ এবং জুবেরী ভবনের পশ্চিম দিকে প্যারিস রোড সংলগ্ন এলাকায় নির্মিত হবে একটি ‘নির্দেশক পোল’ যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এবং স্পটের দুরত্ব দেখানো হবে।

প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ওয়েবসাইট, ‘বই’এর ভাস্কর্য, ‘বইয়ের স্তুপ’, ও ‘নির্দেশক পোল’সহ ৪টি ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬৮০ টাকা। এছাড়াও ‘কিউব’ ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য ৪ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত এ বাজেট বরাদ্দ কম অথবা বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, সম্প্রতি সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, সিনেট ভবন ও বিজ্ঞান ভবনের সামনে যে তিনটি ভাস্কর্য গড়ে উঠছে। এটা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কিনা? তা আমার জানা নেয়। তবে এই ভাস্কর্যগুলো আমাদের বিশ^বিদ্যালয়ের পরিচিতি এবং সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিবে বলে আমি মনে করি।

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আহবায়ক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. চৌধুরী জাকারিয়া বলেন, সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় কিছু নতুন স্থাপনার (ভাস্কর্য) মাধ্যমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রোল মডেল হিসাবে তৈরি করতে যাচ্ছি। যথা সময়ের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। এক্ষেত্রে কোন রকম গাফিলতি করা হবে না।

তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দর্শনার্থীসহ সকলের কাছে সৌন্দর্যের এক নতুন মাত্রা যোগ হবে।