গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে কী করবেন?

ডেঙ্গুজ্বর একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এডিস মশা এই রোগের বাহক। ডেঙ্গু রোগীদের বাসায় চিকিৎসা করা সম্ভব। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হলে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করতে হয়।

এখন সারা বাংলাদেশেই ভয়াবহ ভাবে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মারা গেছে আর এর মাঝে নারী ও শিশুরা বেশী ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুজ্বরে গর্ভবতী অনেক মামারা গেছেন। গর্ভবতীমায়েরা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে তার তীব্রতা অনেক বেশী হয়। তাই গর্ভবতী ডেঙ্গু আক্রান্ত নারীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিতে হয়।

গর্ভবতী নারীরা কেন বেশী ঝুঁকিপূর্ণ?

১. ডেঙ্গু রোগের উপসর্গ অনেকটা প্রেগন্যান্সির কিছু উপসর্গের সাথে মিল রয়েছে, তাই রোগ নির্ণয় দেরী হতে পারে।

২. প্রেগন্যান্সিতে রক্তের CBC রিপোর্টে পরিবর্তন হয়। তাই ডেঙ্গু রোগীদের রক্ত রিপোর্ট যেমন হয়, তার সাথে সবসময় নাও মিলতে পারে।

৩. আবার ডেঙ্গু রোগীদের প্লাটিলেট কমে, লিভার ফাংশন খারাপ হতে পারে, পেটে পানি জমা হতে পারে, এইসব গর্ভবতীর হেলপ সিনড্রোম ( HELLP Syndrom) এর সাথে মিলে যায়, যা খুব ঝুঁকিপূর্ণ একটা অবস্থা।

৪. গর্ভবতী নারীদের যদি রক্তক্ষরণ শুরু হয়, তা মা ও বাচ্চা দুইজনের জন্যই ভীষণ ঝুঁকিকর, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

৫. আবার একজন গর্ভবতীরোগীর যে কোন অসুখ বা সমস্যা তার গর্ভস্থ শিশুটির জন্যও ঝুঁকির কারণ হয়, তাই চিকিৎসার সময় অনেক কিছু ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

কি করবেন?

১. গর্ভবতী নারীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।

২. জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামলের বাইরে আর কিছু দেওয়া যাবেনা।

৩. মুখে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি তরল খাবার খেতে হবে।

৪. ক্রিস্টালয়েড স্যালাইন দিতে হবে শিরাপথে, এটা ওজন হিসাব করে ঠিক করতে হবে।

৫. বমি থাকলে ঔষধ দিতে হবে।

৬. রক্তক্ষরণ হলে বা হিমোগ্লোবিন কমে গেলে ফ্রেশ রক্ত দেওয়া যায় ।

৭. প্লাটিলেট অনেক কমে গেলে বা অল্প সময়ের মাঝে অপারেশন করা লাগলে প্লাটিলেট দেওয়া যেতে পারে।

৮. মায়ের পালস, ব্লাড প্রেশার বারে বারে রেকর্ড রাখতে হবে। কনসালট্যান্ট ( অবস গাইনী), বি আর বি হাসপাতাল।