পশু কোরবানি দেওয়ার সঠিক সময় কোনটা

রাত পেরুলেই ঈদুল আজহা। এই ঈদের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে স্বাবলম্বী মুসলমানরা কোরবানি দেন। তবে কখন কোরবানি দেওয়া যায় বা যায় না—এ নিয়ে ইসলামের সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে।

এ বিষয়ে ওয়াজ মাহফিলের বিশিষ্ট বক্তা মাওলানা জুনায়েদ আহমাদ ছিদ্দিক বলেন, ‘ঈদের জামাতের পর পশু কোরবানি দিতে হবে। তবে কোনও ক্ষেত্রে যদি এমন হয়, একটি পশু একাধিক শরিক মিলে কোরবানি দেবেন ও শরিকরা একাধিক স্থানে বসবাস করেন এবং তারা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঈদের জামাতে অংশ নেবেন, এক্ষেত্রে শরিকরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে যেকোনও সময়ে পশু কোরবানি দিতে পারবেন।’

খ্যাতনামা ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া থেকে প্রকাশিত মাসিক গবেষণাপত্র আল কাউসারে কোরবানি দেওয়ার সময়ের বিষয়ে বিভিন্ন মাসআলা বর্ণনা করেছেন মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া। তিনি লিখেছেন, ‘মাসআলা: ৯. যেসব এলাকার লোকদের ওপর জুমা ও ঈদের নামাজ ওয়াজিব, তাদের জন্য ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করা জায়েজ নয়। অবশ্য বৃষ্টিবাদল বা অন্য কোনও ওজরে যদি প্রথম দিন ঈদের নামাজ না হয়, তাহলে ঈদের নামাজের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিনেও কোরবানি করা জায়েজ’। সূত্র: সহি বুখারি ২/৮৩২, কাজিখান ৩/৩৪৪, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮।

কোন দিন কোরবানি করা উত্তম— এ বিষয়ে এক মাসআলায় মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া লিখেছেন, ‘১০, ১১ ও ১২ জিলহজ,এই তিন দিনের মধ্যে প্রথম দিন কোরবানি করা অধিক উত্তম। এরপর দ্বিতীয় দিন,তারপর তৃতীয় দিন।’ সূত্র: রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৬।

রাতে কোরবানি করার বিষয়ে এক মাসআলায় বলা হয়েছে, ‘১০ ও ১১ জিলহজ দিবাগত রাতে কোরবানি করা জায়েজ। তবে রাতে আলো স্বল্পতার কারণে জবাইয়ে ত্রুটি হতে পারে বিধায় রাতে জবাই করা অনুত্তম। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করতে কোনও অসুবিধা নেই।’ সূত্র: ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার৬/৩২০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫১।

কোরবানিদাতারা ভিন্ন স্থানে থাকলে পশু কখন জবাই করবেন

এক মাসআলায় মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া লিখেছেন, ‘কোরবানিদাতা এক স্থানে আর কোরবানির পশু ভিন্ন স্থানে থাকলে কোরবানিদাতার ঈদের নামাজ পড়া বা না পড়া ধর্তব্য নয়। বরং পশু যে এলাকায় আছে, ওই এলাকায় ঈদের জামাত হয়ে গেলে পশু জবাই করা যাবে।’ সূত্র: আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮।

বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির কোরবানি

মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার কোরবানি সংক্রান্ত গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির জন্য নিজ দেশে বা অন্য কোথাও কোরবানি করা জায়েজ।’