বাঘারপাড়ার চন্ডিপুর ও জহুরপুরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিড ডে মিল চালু

দেশের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের টিফিনে মিড ডে মিল চালু বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। যে কারণে তিনি সব মহলে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন।

প্রাথমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিকেও এ কার্যক্রম চালুর নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় তালিকা প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানায়, নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার ৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০টি স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা সম্ভব হয়েছে। বাকী স্কুলগুলোতে চলতি মাসেই এ কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সরোজমিনে উপজেলার অন্যতম দু’টি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি শ্রেণী কক্ষে শিক্ষার্থীরা টিফিনে যার যার সামর্থ অনুযায়ী মায়ের হাতে রান্না করে আনা খাবার খাচ্ছে। তাদের সাথে বসে একসাথে খাবার খাচ্ছেন শিক্ষকেরাও। আর যে সব শিক্ষার্থী খাবার নিয়ে আসেনি অন্যরা তাদের সাথে নিয়ে খাবার ভাগাভাগি করে খাচ্ছে। গত ১ মাস যাবৎ চন্ডিপুর ও জহুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন টিফিনে এভাবেই মিলেমিশে খাবার খাচ্ছে। এ যেন দিন বদলের এক অন্যরকম বর্ণাঢ্য চিত্র। শুধু এ দু’টি স্কুল নয়, এমন চিত্র উপজেলার প্রায় ৬০টি স্কুলের প্রতিটি শ্রেণী কক্ষে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, মিড ডে মিল তাদের উৎসবে পরিণত হয়েছে। একসাথে মিলেমিশে খাবার খাওয়ার মাঝে রয়েছে অন্যরকম আনন্দ। এতে অংশগ্রহণ করতে এখন আর কেউ স্কুলে অনুপস্থিত থাকে না। টিফিনের সময় বিদ্যালয় থেকে কেউ পালিয়েও যায় না। ফুটপাতের খাবার না খেয়ে তারা সবাই প্রতিদিন বাড়ি থেকে মায়ের হাতের সুস্বাদু খাবার নিয়ে আসে।

চন্ডিপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, শিক্ষার্থীদের একে অন্যের সাথে সহযোগিতার মনোভাব ও সহনশীলতা সৃষ্ঠি হয়েছে। পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, উপস্থিতির হার, মনোযোগসহ লেখাপড়ার সার্বিক পরিবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জহুরপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার কুমার জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয় থেকে পালানোর প্রবণতা কমেছে। তারা আগে টিফিনে ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে প্রায়ই অসুস্থ হতো। বর্তমানে মায়ের হাতে রান্না করা খাবার খাচ্ছে। আগামী দিনের সুস্থ জাতি গঠনে মিড ডে মিলের কোন বিকল্প নেই।

বাঘারপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ তেজারত জানান, বর্তমানে উপজেলার ৮২টি স্কুলের ৬০টিতে মিড ডে মিল চালু হয়েছে। আশা করছি চলতি মাসেই বাকী স্কুলগুলো এ কার্যক্রমে যুক্ত হবে। সরকারের সুস্থ জাতি গঠন ও শিক্ষার মান উন্নয়নে মিড ডে মিল কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।