ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত হত্যাসহ অনেক মামলার রায় দ্রুত ঘোষণায় আমি মনে করি বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। জাতির পিতার হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে অনেক বাধা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, বাধা সত্ত্বেও আমরা এসব মামলার বিচার করতে সক্ষম হয়েছি।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টে বিচার বিভাগীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর খুনিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরষ্কৃত করা হয়েছিল। খুনিকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করা হয়েছিল। হত্যাকারীদের নানাভাবে মদদ দেওয়া হয়েছিল। হত্যার বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি বিল জারি করা হয়। আমরা যারা ভুক্তভোগী ছিলাম আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ ছিল না। সেই সময় দেশে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে এমন অবস্থা ছিল।
বিচার বিভাগের ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছিল, বিচার বিভাগ সেই অবৈধ সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে। এ সাহসী ভূমিকার জন্য বিচার বিভাগকে আমি ধন্যবাদ জানাই।
সবারই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটি রাষ্ট্র পরিচালনায় আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সকল নাগরিক যাতে আইগত সহায়তা পায় সেজন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা- ন্যাশনাল লিগাল এইড সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
সন্ত্রাসীদের হামলায় দু’জন বিচারক নিহতের ঘটনা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিচারকদের নিরাপত্তা সবার আগে দরকার। এজন্য আমরা বিচারকদের আবাসন ও গাড়ি সুবিধা বৃদ্ধি করেছি। বিচারকদের আবাসন ব্যবস্থা একটু ভিন্নভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে লাইব্রেরি, বসে চিন্তা করার মতো জায়গা রাখা হয়েছে। এছাড়া বিচার বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে বাজেটে পৃথক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিচারকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন নতুন চালু করা হয়েছে ভাতা। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ধারাবাহিকতায় বিচার বিভাগেও ই-জুডিশিয়ারি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ইংরেজিতে লেখার পাশাপাশি বাংলায়ও রায় লেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ ইংরেজি না জানার কারণে রায়ে কী বলা হয়েছে তা অনেকেই জানতে পারেন না।