সুপার হোমের নতুন বছরের শুভেচ্ছা : রাজধানীতে ব্যাচেলরদের জন্য আবাসন

রাজধানীতে ব্যাচেলরদের জন্য আবাসন। ব্যাচেলর কিন্ত কর্মমুখী জীবন। নারী অথবা পুরুষ। মহাব্যস্ত তিলোত্তমা ঢাকায় ব্যাচেলরদের জন্য আবাসন বিড়ম্বনা যে কতটা তা যারা ভুক্তভোগী তারাই কেবল বোঝেন। পুরুষ ব্যাচেলরদের জন্য রাজধানীতে বাসা ভাড়া পাওয়া যেনো যুদ্ধজয়ের মতো। আর যাওবা মেলে ভাড়া, তাতে নাগরিক সেবার ন্যুনতম মান বজায় থাকেনা। পাশাপাশি মানসম্মত খাবার দুরঅস্ত । বরং একজন পাচক-পাচিকা খুঁজে বের করতে গলদঘর্ম হতে হয়। ঘর কাপড় পরিষ্কার করা বাজার সদাইয়ের ঝক্কিতো আছেই।

এদিকে রাজধানীতে নারী কর্মজীবীদের অবস্থা আরো করুন। এখনো কর্মক্ষেত্রে নানা অসুবিধার বিরুদ্ধে লড়াই করা সিঙ্গেল নারীদের জন্য সুনিরাপত্তা সমৃদ্ধ স্বল্পখরচের আবাসন যেনো সোনার পাথরবাটি।

রাজধানীতে ১০০ ব্যাচেলর হোস্টেলের ভাবনা নিয়ে ২০১৭ সাল থেকে কাজ শুরু করে চীনা বিনিয়োগের বাংলাদেশ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নিওয়েজ।

‘সুপার হোম’ নামে স্বল্পমূল্যে ব্যচেলরদের জন্য ২৫টিরও বেশি সুবিধা প্রদানের হোস্টেল প্রকল্প নিয়ে প্রকল্পটির বাংলাদেশ প্রধান ও প্রতিষ্ঠানটির ডিজিএম (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার) মো. রাসেল কবির বলেন, আমাদের সমাজে ব্যচেলরদের প্রতি একটি ধারণাগত ভুল ভাবনা কাজ করে। তৈরী হয়েছে বাজে ধারণা। আমরা এ ধারণা বদলাতে চেয়েছি। অতিথি সেবাকে মুখ্য করে কম খরচে আমরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আবাসন, তিন বেলা খাবার, স্বাস্থ্যসম্মত পানি, পরীক্ষা করা খাবার, ২৪ ঘন্টা বিনামূল্যের ওয়াইফাই, ২৪ ঘন্টার সিসি ক্যামেরা, ব্যক্তিগত লকার, জিম, রিডিং রুম সুবিধাসহ ২৫ ধরণের সেবা দিচ্ছি। আমরা ব্যাচেলরদের মনে এই ধারণা বিশ্বাস করাতে সচেষ্ট যে স্বল্পমূল্যে তাদের পক্ষে কোয়ালিটি সেবা পাওয়া সম্ভব।

super hostel 3তিনি বলেন, দেশের ছাত্রাবাসগুলোতে অধিক লাভের আশায় অমানবিক ভাড়া চাওয়া হয়। যা অনেকের সামর্থ্যরে বাইরে। মেয়েদের আবাসনের অবস্থা আরো নাজুক। আগামী ৩ বছরে আমরা সব মিলিয়ে ১০০ হোস্টেলের যে পরিকল্পনা করেছি তাতে মাত্র শতকরা ১ ভাগ ব্যাচেলরকে সেবা দান করা সম্ভব। আমরা বাজার বা মুনাফার দিকে না তাকিয়ে আগে সেবার মাধ্যমে সমস্যাটাকে দূর করার চেষ্টা করছি। জানি কাজ করলে স্বীকৃতি আসবে। বাজারও তৈরী হবে। মুনাফাও মিলবে। ‘সুপার হোম বিডির মাধ্যমে আধুনিক মানসম্মত হোস্টেল ব্যবস্থা চালুতে আমরা সচেষ্ট হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, সরকারী হিসেবে রাজধানীর জনসংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি। এর মধ্যে অবিবাহিত চাকরীজীবী এবং শিক্ষার্থী অন্তত দশ লাখ। আর এ খাতটিকেই আমরা সেবা দেওয়ার বড় জায়গা বলে মনে হয়েছে আমাদের কাছে।

২০১৮ সালের জুলাই থেকে পুরোদমে চালু হওয়া ‘সুপার হোমের বর্তমান শাখা ৬টি। ৫টি ছেলেদের জন্য এবং একটি মেয়েদের। এর মাঝে মিরপুর কমার্স কলেজের উল্টো দিকে নিউইয়র্ক ৫ বলে পরিচিত ছেলেদের ‘সুপার হোমের সুসজ্জিত লবিতে স্থাপিত বড় এলইডি টিভিতে সিনেমা উপভোগ করতে দেখা যায়। ৬ তলা এই ভবনটিতে এক ছাদের নীচে ১৫০ জন থাকবার সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে পুরো হোস্টেলে থাকছেন ১০০ জন।

রাজশাহী থেকে আসা শাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমি রাজশাহী থেকে এসেছি। দুই মাস ধরে এসেছি। আত্মীয় স্বজন নেই। এক সুত্রের মাধ্যমে হোস্টেলটির খোঁজ মেলে। ভেবেছি গালগল্প করছে যে ৭০০০ টায় তিন বেলায় খাওয়ানো, সারাক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ চলবে। এখন দেখছি ২ মাস ধরে। পুরোটাই সত্য। একথায় সত্যিই সুপার এদের সেবার মান।

হোস্টেল সুপার হোসাইন কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা আমাদের সেবা প্রাপ্তদের গ্রাহক না ভেবে সদস্য মনে করি। সেই ভাবে তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।

মেয়েদের হোস্টেলেও একই ধরণের সুবিধা বিদ্যমান। রয়েছে পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা । প্রত্যেক সদস্যের পরিচয়পত্র যাচাই করে সদস্য নেওয়া হয়। বাড়ি ভাড়া নিতে গেলে যে ফর্ম প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় তা এখানেও করা হয়।

হোস্টেলটির সুপার হসপিটিলিটি সেবায় বিশেষ পড়াশোনা করা নাদিয়া মল্লিক রীমু বলেন, ‘প্রত্যেক নারীকে তার সুবিধা নিশ্চত করা হয়। আমাদের এখানে এখন আইনজীবী সদস্য রয়েছেন। যার কাছ থেকে আমি নিজেও বই নিয়ে পড়ি। এখানে সবাই বন্ধুর মতো কিন্ত কেউ কাউকে অযথা বিরক্ত করেনা। অথচ লবি রুমে তাদের খুনসুটি এবং আন্তরিকতা না দেখলে এর যথার্থতা বোঝা যাবেনা।’