সেই ভারতীয় পুলিশ কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফর নিয়ে তদন্ত

পাকিস্তানপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে সমপ্রতি ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, দেবিন্দর সিং নামের ওই পুলিশ কর্মকর্তা লস্কর-ই-তৈয়বা ও হিজবুল মুজাহিদীনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একইসঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানানো হচ্ছে যে, অভিযুক্ত দেবিন্দর সিং গতবছর বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন।

অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ। সংস্থাটিকে দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত ভার।

এতেই দেবিন্দর সিংয়ের ‘বাংলাদেশ লিংক’ বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ডব্লিউআইওএন। সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ বিষয়ে পরবর্তী তদন্তের জন্য দেবিন্দর সিংকে রাজধানী নয়া দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হবে। এটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের অধীনে ও বেআইনি কার্যক্রমে যুক্ত থাকার দায়ে আরো একটি মামলা করেছে এনআইএ। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ডিএনএ ইন্ডিয়াসহ দেশটির বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেবিন্দর সিং গত বছর অতি অল্প সময়ের মধ্যে তিন বার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। এতে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশে তার মেয়ে পড়াশুনা করছেন। তবে কোন প্রতিষ্ঠানে তিনি পড়াশুনা করেন তার উল্লেখ নেই কোনো প্রতিবেদনে। ভারতীয় তদন্তকারীরা এখন তার এতোবার বাংলাদেশ সফরের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশে এসে তিনি কার সঙ্গে দেখা করেছেন সেটিও প্রাধান্য পাচ্ছে তাদের তদন্তে।

জম্মু-কাশ্মীরের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, দেবিন্দর সিং ২০১৯ সালের মার্চ, মে ও জুলাই মাসে বাংলাদেশ সফর করেন। এনআইএ তার এই সফর নিয়ে তদন্ত করছে। কারণ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এ বিষয়ে তদন্ত করার এখতিয়ার নেই। এনআইএ সন্দেহ করছে যে, বাংলাদেশে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাত করে থাকতে পারেন দেবিন্দর। এটি তাদের তদন্তের গুরুত্বপূর্ন দিক। আরেক পুলিশ সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, বাংলাদেশ সফরের পর ওই পুলিশ কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকবার লেনদেন হয়েছে। ওই অর্থ কোথা থেকে আসে? তিনি কি ভারতের বাইরে থেকে কোনো অর্থ পেয়েছেন? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া জরুরি। আর এই বিষয়টি নিয়ে এনআইএ তদন্ত করছে।

উল্লেখ্য, কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার বাসিন্দা দেবিন্দর সিং। শ্রীনগরের অমর সিংহ কলেজের সাবেক ছাত্র তিনি। ১৯৯৪ সালে তিনি জম্মু কাশ্মীর পুলিশে যোগ দেন এস আই পদে। পরে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ বা এসওজি-র গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হন। সমপ্রতি হিজবুল কমান্ডারের সঙ্গে তার কথোপকথন গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে। গোয়েন্দারা মনে করছে, দেবিন্দর কাশ্মীর থেকে হিজবুল জঙ্গিদের পাকিস্তানে পাঠানোর জন্য সাহায্য করছিলেন। এ জন্য মোটা অঙ্কের টাকাও নিয়েছেন তিনি এমনটা ধারণা করা হচ্ছে।