যশোরে সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পুলিশের অভিযান, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার

jessore atok news

যশোর শহরতলীর শেখহাটি কাজী ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ তিন কলেজছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

এসময় সন্ত্রাসীরা ৭ মামলার আসামি চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুয়েল কাজীসহ তিনজন পালিয়েছে। জুয়েল এ ছাত্রাবাসের মালিক এবং সদর উপজেলার শেখহাটি এলাকার কাজী আলমের ছেলে।

আটকরা হলেন- যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক ইসলাম, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু হেনা রোকন ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাফিউন।

যশোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার নেতৃত্বে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম শেখহাটি কাজী ছাত্রবাসে অভিযান চালান। এ সময় ছাত্রবাসের একটি কক্ষ থেকে একটি পিতলের শর্টগান, একটি ওয়ান শুটার গান, ৫ রাউন্ড গুলি, ৫টি বোমা, তিনটি চাকু, দুটি রামদা, ৯টি রড, এক বোতল মদ, ৫টি খালি মদের বোতল, ১শ’ পিস ইয়াবা ও কয়েক পোটলা গাঁজা ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে ওই কক্ষ ব্যবহারকারী তিন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

তিনি আরও জানান, আটকদের মধ্যে তৌফিক ইসলাম মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে, রাফিউন একই গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে এবং আবু হেনা রোকন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বোরাখারাটি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অস্ত্রগুলোর মূল মালিক শেখহাটি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল কাজী। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে গেছে। আটকদের সঙ্গে তাকেও মামলার আসামি করা হবে।

ওই ছাত্রাবাসটি জুয়েল ও তার সহযোগীদের গোপন আস্তানা ও অস্ত্রভান্ডার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এছাড়াও সেখান থেকে অস্ত্র ও মাদক চোরাচালানের সিন্ডিকেট পরিচালনা করা হত বলে দাবি পুলিশের।

এদিকে, রাত ১টার দিকে অভিযান সাময়িক স্থগিত করা হলেও আজ বুধবার ফের ওই মেসে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, যশোর চাচড়া এলাকার চেকপোষ্ট এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে রাশেদুল হাসান রাহুলকে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে সন্ত্রাসী জুয়েল ও তার সহযোগী পলিটেকনিক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দড়াটানায় মারপিট করে এবং চুরিকাঘাত করে। এ ঘটনায় তার আত্মীয় ৮জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। রাহুলের অবস্থা আশংকাজনক। মামলা দায়ের ঘটনায় সন্ত্রাসী জুয়েল ও তার দলবল রাহুলের লোকজনকে হুমকি দেয়। ঘটনাটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানালে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) গোলাম রব্বানী, কোতয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েলের বাড়ি এবং তার ছাত্রাবাসে অভিযান চালান। ছাত্রাবাস থেকে জুয়েলসহ তিনজন পিছন থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ এসময় গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ছাত্রাবাসের ১০টি রুমে তল্লাসি চালায়। পুলিশ জুয়েল ও তার পিতা কাজী আলমের রুম থেকে ওয়ানস্যুটারগান, রিভলবার, ৫ রাউন্ড গুলি, ৩টি ধারালো অস্ত্র, ৫টি বোমা, বোমা তৈরির বিপুল সরঞ্জাম, ৯টি লোহার রড, ইয়াবা, গাঁজা, মদের বোতল,দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করে।