মধ্যে রাতে ফার্মেসীতে ডাকাতি, ভিডিও ফুটেজ ঘিরে তদন্ত

ঢাকার মোহাম্মদপুরের বিল্লাহ ফার্মেসীতে ডাকাতি করা মাস্ক পরিহিত ডাকাতদের শনাক্ত করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ফার্মেসীর সিসি ক্যামেরা ফুটেজ অস্পষ্ট থাকায় ডাকাতদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাই ঘটনাস্থলের আশেপাশের কয়েকটি সিসি ক্যামেরা ফুটেজ ঘিরে তদন্ত চলছে। ডাকাতরা কোন দিক থেকে এসে কোন দিক দিয়ে পালিয়েছে সেটি খোঁজে বের করা হচ্ছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডাকাতদের মুখে মাস্ক থাকায় তাদের চেহারা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন ভিডিও ফুটেজ ও প্রযুক্তির সাহায্য ডাকাতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

র‌্যাব-২ এর কোস্পানি কমান্ডার ও পুলিশ সুপার মহিউদ্দীন ফারুকী বলেন, ডাকাতরা কোথা থেকে কিভাবে আসলো সেরকম কোনো ক্লু মিলছে না। ভিডিও ফুটেজ থেকেও সেরকম কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমরা প্রযুক্তির সাহায্য তাদেরকে শনাক্তের চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, এরকম একটা সময় ফার্মেসীতে ডাকাতি হয়েছে তাই বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আব্দুল আলিম বলেন, আমরা দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। কিন্তু স্পষ্ট কিছু বুঝা যাচ্ছে না। এখন আরও কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করছি। ডাকাতি করে তারা কোন দিক দিয়ে গেল সেটি খোজার চেষ্টা করছি।

বুধবার রাত ১টার দিকে মোহাম্মদপুরের কলেজগেট এলাকার বিল্লাহ ফার্মেসীতে ডাকাতি ঘটনা ঘটেছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পার্শবর্তী এই ফার্মেসীতে মুখোশ পরে কয়েকজন ডাকাত অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও নগদ ১৯ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে করে ওই এলাকার অন্যান্য ফার্মেসীর মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডাকাতির ঘটনায় ফার্মেসীর মালিক বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখন সেই মুখোশধারী ডাকাতদের খোঁজে বের করার জন্য মাঠে নেমেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র ও ফার্মেসীর মালিক নাহিদ বিল্লাহ জানান, ওইদিন রাত আনুমানিক ১ টার দিকে চারদিকে সুনসান নীরবতা ছিল। মানুষের চলাচল খুব একটা ছিল না। ফার্মেসীর মালিক নাহিদ তখন ফার্মেসী বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছিলেন। তখন আরমান নামের একজন ক্রেতা ওষুধ নিতে আসেন। ঠিক তখনই একটি ট্র্যাক এসে ফার্মেসির সামনে দাড়ায়। পরে ট্রাকের ভেতর থেকে কয়েকজন লোক মাথায় গামছা ও মুখে মাস্ক পরে ফার্মেসীর দিকে যায়। এদের মধ্যে চাপাতি ও রড নিয়ে দুজন লোক ফার্মেসীর ভেতরে প্রবেশ করে। তারা ফার্মেসীর মালিক ও ইউসিবিএল ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী মোঃ সোহাগকে মারধর করে দোকানের পেছনে নিয়ে যায়। পরে ডাকাতরা ফার্মেসীর ক্যাশ থেকে ১৯ হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপ নেয়। যাবার সময় ফার্মেসীতে আসা আরমান নামের এক ক্রেতা ও নিরাপত্তাকর্মী সোহাগের কাছ থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ওই দোকানের ক্রেতা আরমানের বরাত দিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আরমান ওষুধ কেনার জন্য বিল্লাহ ফার্মেসিতে আসেন। ফার্মেসীতে কয়েক মিনিট পর একটি ট্র্যাক এসে থামে। এরপর মুখে মাস্ক পরা তিনজন ফার্মেসিতে ঢুকে আমাকে চাপাতির উল্টা পাশ দিয়ে মারধর করে আরমানের পকেটে থাকা মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।

ইউসিবিএল এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী মোঃ সোহাগ জানান, তখন ফার্মেসী বন্ধ করার সময় হয়ে গেছে। আমি একটি পানির বোতল নিয়ে বের হবো। ঠিক ওই সময় মুখে মাস্ক পরা তিনজন ফার্মেসিতে প্রবেশ করে। একজনের হাতে চাপাতি ও আরেকজনের হাতে রড ছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রথমে তারা আরমান নামের এক ক্রেতাকে চাপাতি দিয়ে মারধর করে। আমি তখন প্রতিবাদ করে বলি কি হয়েছে ভাই? এভাবে মারছেন কেন? থামেন। এসব বলার সঙ্গে সঙ্গেই চাপাতির ভয় দেখিয়ে আমাদেরকেও মারধর করে। ফার্মেসীর পেছনে নিয়ে যায়।