ঢাবির আবাসিক হল বহিরাগত মুক্ত করার সিদ্ধান্ত

dhaka university - du logo

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোকে বহিরাগত মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা ‘গণরুম’ ব্যবস্থার অবসান ঘটানোর জন্য প্রভোস্ট কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে সভা থেকে।

মঙ্গলবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রভোস্ট কমিটির এক সভা অনলাইন ভার্চুয়াল মিটিং প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে উপাচার্য ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন সংযুক্ত ছিলেন।

করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসনে এবং আবাসিক হলের শিক্ষা ও জীবনমানসহ সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে হল প্রশাসন বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট হলের নীতিমালার আলোকে হলে অবস্থান করবে। যাদের ছাত্রত্ব নেই তারা কোনোক্রমেই হলে অবস্থান করতে পারবে না। তাদেরকে হল প্রশাসন কর্তৃক বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট কক্ষ/সিট ছেড়ে দিতে হবে। তীব্র আবাসন সংকট নিরসনে এর বিকল্প নেই বলে মনে করে কর্তৃপক্ষ।

সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে আরও রয়েছে, হলের কোনো কক্ষের মেঝেতে কোনো শিক্ষার্থী অবস্থান করতে পারবে না। প্রয়োজনে যথাযথ নিয়মে ডাবলিং করতে পারবে। হল প্রশাসন যেসব কক্ষে খাট/বেড নাই ছুটিকালীন সময়ে সেসব কক্ষে নিয়মমাফিক খাট/বেড সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেবেন।

সভায় অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, এসব সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হলে দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা কথিত ‘গণরুমের’ অবসান ঘটবে। তবে এই ‘গণরুমের’ অবসান ও ‘যাদের ছাত্রত্ব নেই তাদের হলে অবস্থান না করার’ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা অত্যাবশ্যক।

সভায় উপস্থিত একাধিক প্রাধ্যক্ষ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু অনেক সময় বহুবিধ কারণে হয়ে ওঠে না। হলগুলোতে বৈধ শিক্ষার্থীদের রাখতে প্রশাসন প্রয়োজনে কঠিন হবে। পড়াশোনা শেষ করা শিক্ষার্থীদের হলে না রাখতে ছাত্রসংগঠনগুলোর সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন হবে। ছাত্রসংগঠনগুলো সহযোগিতা না করলে বাস্তবায়ন করা মোটেও সম্ভব হবে না।

এদিকে আবাসিক হলগুলোকে বহিরাগত মুক্ত করতে ডাকসু সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দেয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। ডাকসু নির্বাচনের সময়ও সব ছাত্রসংগঠনই আবাসিক হলগুলোকে বহিরাগত মুক্ত করার প্রতিশ্রুত দিয়েছিল। তাই এখন প্রশাসন যদি এই ব্যাপারে সদিচ্ছা দেখায় তাহলে ডাকসুর পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, যদি প্রশাসন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। আর ছাত্রলীগ প্রাশাসনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে বলেও তিনি জানান।