আম্ফানের তাণ্ডবে যশোরেই ৬ জন নিহত, অসংখ্য ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান যশোরাঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাওয়ার সময় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঝড়ে বুধবার রাতে যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় বিপুল পরিমাণ গাছপালা ভেঙে পড়েছে ও ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

জেলায় গাছ ও ঘরচাপা পড়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে চৌগাছায় গাছচাপায় মা ও মেয়ে নিহত এবং ছেলে আহত হয়েছে। এছাড়া শার্শায় পৃথক ঘটনায় তিনজন এবং বাঘারপাড়ায় একজন নিহত হয়েছেন। সব উপজেলাতেই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবিজ, আম ও লিচুর।

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বুধবার সারাদিন থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল।সন্ধ্যার পর থেকে ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। রাত ৮টার পর থেকে বাড়তে থাকে ঝড়ের গতি। যশোরে সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হওয়ার খবর দিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার মধ্যরাত ১২টার পর যশোরের উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে গেছে। সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় এ ঝড়ো হওয়া। রাত ৮টার পর থেকে ঝড়ের গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। রাত দু’টার পর থেকে কমতে থাকে ঝড়ের গতিবেগ। ঝড়ের সঙ্গে ছিল ভারী বৃষ্টিপাতও।
বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১২১ মিলিমিটার।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে গোটা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গাছ-পালা, ঘর-বাড়ি ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

চৌগাছায় গাছচাপা পড়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, চৌগাছা পৌরসভার হুদো চৌগাছা এলাকার ওয়াজেদ হোসেনের স্ত্রী চায়না বেগম (৪৫) ও মেয়ে রাবেয়া খাতুন (১৩)। ঝড়ে ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়লে এ দু’জন নিহত হন। আহত হন চায়না বেগমের ছেলে আল-আমিন (২২)।

এছাড়া গাছচাপা পড়ে শার্শা উপজেলার মালোপাড়ার সুশীল বিশ্বাসের ছেলে গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, গোগা পশ্চিমপাড়ার শাহজাহানের স্ত্রী ময়না খাতুন (৪০) ও বাগআঁচড়া জামতলা এলাকার আব্দুল গফুর পলাশের ছেলে মুক্তার আলী (৬৫) এবং বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট বুদোপাড়া এলাকার সাত্তার মোল্লার স্ত্রী ডলি খাতুন (৪৫) নিহত হয়েছেন।

ঝড়ে প্রাণহানির পাশাপাশি সবজি, ফসল ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় বিপুল পরিমাণ ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে। বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া আম ও লিচুর সিংহভাগই ঝড়ের তাণ্ডবে ঝরে পড়েছে।

যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে গাছচাপা পড়ে জেলায় ৬ জন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। সবজি, আম ও লিচুর ক্ষতি হয়েছে। তবে বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে বিধায় ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। গৃহ বা ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাজ চলছে।