করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যেও যশোরের বিভিন্ন এনজিও’র কর্মীরা গ্রাহকদের ক্ষুদ্রঋণের কিস্তির টাকা নিতে চাপ প্রয়োগ করছে। ২২ মার্চ এনজিওর ঋণ শ্রেণীকরণ জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) এবং ছয় মাসের জন্য এনজিও ঋণের কিস্তি শিথিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি।
কিন্তু যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় তার কোনো কার্যকর’ই হচ্ছে না।
ঋণ গ্রহীতাদের অভিযোগ এনজিও ও স্থানীয় সমিতির কর্মীরা এপরিস্থিতিতেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তি পরিশোধ করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ শুরু করছে। এমনকি ফোনের মাধ্যমে কিস্তি আদায়ের জন্য ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের তাগাদা করা হচ্ছে।
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় দেশের বহু মানুষের আয়-রোজগারের সকল পথই বন্ধ হয়ে গেছে। আর্থিকভাবে চরম দুর্দশায় রয়েছেন কর্মহীন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের এ সমস্ত সাধারণ মানুষ।
জানাগেছে, সাধারণ মানুষের এসব অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ৩০ জুন পর্যন্ত সকল এনজিও/সমিতি ঋণের কিস্তি শিথিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি। দেশের এনজিও বা ক্ষুদ্র ঋণ দান প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন সেসব প্রতিষ্ঠান আগামী জুন মাসের শেষ পর্যন্ত কোনো কিস্তি জোর করে আদায় করতে পারবে না। তবে কেউ স্বেচ্ছায় দিলে নিতে পারবেন উল্লেখ করে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে সংস্থাটি। তবে এসব প্রজ্ঞাপনের তোয়াক্কা না করে রূপদিয়া এলাকার আশা, ব্রাক, গ্রামীণ ব্যাংক, টিএমএসএস, বুরো বাংলাদেশ, আলাপ, আদ¦দীন সহ অন্তত দু’ডর্জন এনজিও সমিতির মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণগ্রহীতাদের চাপ প্রয়োগ করছেন।
নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা দিনমজুর সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন কাজ করে সংসার খরচ ও সপ্তাহে ৮৫০ টাকা এনজিও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছি। প্রায় দুই মাস হলো করোনা ভাইরাসের কারণে এনজিও’র কিস্তি নেওয়া বন্ধ ছিল। কিন্তু কয়েকদিন থেকে আবার কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছে।
দোকান ব্যবসায়ী ফয়সাল ইসলাম বলেন, ঈদের সময় টাও দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিন্তু অফিস খোলার সঙ্গে সঙ্গে এনজিও কর্মীরা ঋণের কিস্তির জন্য দোকানে এসে চাপ দিচ্ছেন। এপরিস্থিতিতে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সরকারের উপরি মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনজিও কর্মী বলেন, অফিস খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ম্যানেজাররা কিস্তির টাকা ওঠানোর জন্য বলছেন। এ কারণে আমরা কিস্তির টাকা পরিশোধ করার জন্য গ্রাহকদের চাপ দিতে বাধ্য হচ্ছি।