টানা ১০ মাস চলে অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছল ৭৪ চাকার দানবীয় ট্রাক!

অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছল দৈত্যাকার ম্যামথ ট্রাক। ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে কেরালার তিরুবনন্তপুরমে এক হাজার ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে অতিকায় এই ট্রাকটির সময় লেগেছে ১০ মাস!

৭৪টি টায়ারে ভর করে ৭০ টন ওজনের বিশাল এই যান শামুকের গতিতে অতিক্রম করেছে পাঁচটি রাজ্য। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার (১৭ জুলাই) তিরুবনন্তপুরমের বিক্রম সারাভাই মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছেছে মহাকাশ অভিযানের উপযোগী গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র নিয়ে। বলা ভালো, সাধারণ ট্রাকের এই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে মাত্র পাঁচ দিন।

বিশাল দেহের ট্রাকটির চলাচলের সুবিধায় গত কয়েক মাস ধরে সারানো হয়েছে সড়কের অসংখ্য ফাটল ও গর্ত, অতিরিক্ত গার্ডার লাগিয়ে মজবুত করা হয়েছে একাধিক সেতু এবং ট্রাক চলার পথে বাধা সৃষ্টিকারী গাছ কেটে ও বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে ফেলা হয়। ট্রাকটি চলার সময় রাস্তায় অন্য কোনো যান চলতে দেওয়া হয়নি। গোটা সফর কড়া পুলিশ এসকর্টে থেকেছে এই দানবীয় যান।

২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর নাসিক থেকে যাত্রা শুরু করেছিল ভলভো এফএম সিরিজের ম্যামথ ট্রাকটি। মাঝে লকডাউনের জেরে সমস্যায় পড়েন বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংস্থার কর্মী সুভাষ যাদব। ওই সময় অন্ধ্র প্রদেশে প্রায় এক মাস আটকে থাকে ট্রাকটি। পরে সংস্থার হস্তক্ষেপে ফের যাত্রা শুরু করে বিশালকায় এ যান। ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিকসহ প্রায় ৩০ জনের সহায়ক দল গোটা যাত্রাপথে সঙ্গী হয় ট্রাকের।

ট্রাকের পেছনে জুড়ে দেওয়া মূল যন্ত্রের উচ্চতা ৭.৫ মিটার, প্রস্থ ৭ মিটার। সেটি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রেলারের স্যাসি অনেক বেশি শক্তিশালী করতে হয়েছিল। অনেক জায়গায় অতিকায় যানের জন্য রাস্তা চওড়া করতে হয়েছে বলেও জানা গেছে।

যাত্রাপথে কেরালায় এক বৃদ্ধা এসে তাঁদের পরামর্শ দিয়েছেন, মহাকাশে রকেট পাঠানোর পরিবর্তে বরং কভিড প্রতিষেধক টিকা তৈরিতে মনোযোগী হোক সরকার। এমনই জানিয়েছেন ট্রাকের সফরসঙ্গী দলের প্রতিনিধিরা।

ট্রাক পৌঁছলেও প্রচণ্ড ভারী অটোক্লেভটি এখনো নামানো সম্ভব হয়নি হলে জানিয়েছেন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তারা। এই যন্ত্রের সাহায্যে মহাকাশযাত্রার উপযোগী বিশাল মাপের এরোস্পেস পণ্য তৈরি করা যাবে বলে জানা গেছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি মাসেই কিছু রদবদলের পর যন্ত্রটি কাজে লাগানো হবে।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।