প্রাইমারি শিক্ষক ও তার স্ত্রী হত্যা : ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

সম্পত্তির জন্য টাঙ্গাইলে অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারি শিক্ষক অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- স্বপন কুমার দাস, জাহিদুল ইসলাম, ফরহাদ, মনিরুজ্জামান ভুইয়া, মঞ্জুরুল ইসলাম ও শয়ান মিয়া।

অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানীকে হত্যা করায় পৃথকভাবে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

এছাড়া হত্যার পর তাদের লাশ গুম করায় আসামিদের প্রত্যেকের সাত বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় ছয় আসামি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে পাঁচজন কারাগারে আটক ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘এ রায়ের মাধ্যমে ভিকটিমের পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছেন।’

আসামি পক্ষের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান ও চান মিয়া বলেন, ‘রায়ে আসামিরা ন্যায়বিচার পাননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করব।’

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিম অনীল কুমারের সৎভাই স্বপন কুমার দাস অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য কৌশল অবলম্বন করতে থাকেন। স্বপন কুমার দাসের সঙ্গী মাদকসেবী মনিরুজ্জামান, ফরহাদ, মঞ্জুরুল, জাহিদ ও শয়ান মিয়া ভিকটিম অনীল কুমারের সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার পরিকল্পনা করেন।

২০১৭ সালের ২৬ জুলাই টাঙ্গাইলের রসুলপুরের বাসায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভিকটিম অনীল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানীকে হত্যা করে। হত্যার পর তাদের লাশ বস্তায় ভরে বাসার বাথরুমের সেফটি ট্যাঙ্কের ভেতরে ফেলে রাখে। এরপর পুলিশ এসে তাদের লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ভিকটিম অনীল কুমারের ছেলে নির্মল কুমার দাস বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর খানায় একটি মামলা করেন।

২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিকটিম অণীল কুমারের সৎভাই স্বপন কুমারসহ ছয়জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ৩৫ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ২৭ জন সাক্ষ্য দেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- স্বপন কুমার দাস, জাহিদুল ইসলাম, ফরহাদ, মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, মঞ্জুরুল ইসলাম ও শয়ান মিয়া।