ডেটিং অ্যাপে নুসরতের ছবি দিয়ে বন্ধুত্বের ডাক! তদন্তে লালবাজার

ডেটিং অ্যাপের বিজ্ঞাপনে অভিনেত্রী-সাংসদ নুসরত জাহানের ছবি। সেখানে ফলাও করে লেখা, ‘লকডাউনে ঘরে বসে বন্ধুত্ব পাতান। নুসরতের বিষয়ে এখানে আরও জানুন।’ সেই বিজ্ঞাপন দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোরদার আলোচনা শুরু হতেই বিষয়টি নজরে পড়ে নুসরতের। তত ক্ষণে তাঁর উদ্দেশে কটাক্ষ-বার্তা পোস্ট হতে শুরু করেছে। নুসরতের দাবি, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। ওই অ্যাপের তরফে তাঁর সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ করা হয়নি। নেওয়া হয়নি অনুমতিও। গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে তিনি কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলে ওই অ্যাপের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন। আনন্দবাজার

সোমবার সকালে এক নেটাগরিক নুসরতকে ট্যাগ করে টুইটারে প্রশ্ন তোলেন, ‘এক জন সাংসদ-নায়িকার মুখ ভিডিয়ো চ্যাট অ্যাপে ব্যবহার হচ্ছে। তাঁর অনুমতি ছাড়া কী ভাবে সম্ভব?’ পাল্টা টুইট করেন নুসরত। জানান, ‘আমার অনুমতি ছাড়া ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলকে জানাচ্ছি। আইনি ব্যবস্থা নেব।’ পরে তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটা ফেসবুকে স্পনসর বিজ্ঞাপন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ওটা একটা ডেটিং অ্যাপ। অনুমতি না নিয়ে সেখানে আমার মুখ ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে বিষয়টি জানাই। আমার সঙ্গে কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল যোগাযোগ করেছে। আমি ওই অ্যাপ কোম্পানির বিরুদ্ধে এফআইআর করছি।”

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিন টুইটারে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা জানান, ‘তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’ বাংলার নামী নায়িকা তথা বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের ছবি কেন ওই অ্যাপের বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত হল, তা খতিয়ে দেখছে সাইবার শাখা। ‘বন্ধুত্বের ডাক’ দেওয়ার নেপথ্যে সাইবার অপরাধীদের কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখছে তারা।

এ প্রসঙ্গে সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কারও অনুমতি ছাড়া তাঁর ছবি যদি কোথাও ব্যবহার করা হয়, তা হলে সেটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে, আমাদের দেশে এ বিষয়ে কড়া আইনের বিধান নেই। এই ধরনের অপকর্ম রুখতে আরও কড়া আইন আনা দরকার।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কেউ অ্যাপ তৈরি করতেই পারেন। অ্যান্ডয়েড বা আইওএস প্ল্যাটফর্মে সেটা দিতেও পারেন। সে জন্য তাঁদের কোনও প্রশাসনিক বা আইনি অনুমতি নিতে হয় না। ওই প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব নিয়মবিধি মানলেই হয়। আর তাঁরই ফাঁক গলে অনেক অ্যাপের মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়। এ বিষয়ে অবিলম্বে কড়া আইন আনা উচিত।’’