যশোরে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫জন আটক

যশোরে ছুরিকাঘাত ও বোমা ফাটিয়ে এনামুল হক নামে এক মোটরপাটর্স ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত টাকার মধ্য থেকে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫শ’ টাকা, দুটি চাকু ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

আটককৃতরা হলো যশোর শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলা এলাকার মুনসুর মোল্লার ছেলে টিপু, বারান্দি মোল্লাপাড়া রবিউল ইসলামের সাঈদ ইসলাম, ধর্মতলা হ্যাচারিপাড়ার রুহুল আমীনের ছেলে ভাগনে বিল্লাল, সিটি কলেজ পাড়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে রায়হান ও পূর্ব বারান্দি মালোপাড়ার মৃত মুফতি আলী হুসাইনের ছেলে ইমদাদুল হক।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে ছিনতাইয়ের ঘটনাটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয় পুলিশ। ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও মোবাইল ফোনের তথ্য বিশ্লেষণ করে ছিনতাইকারীদের সনাক্ত করে অভিযান চালানো হয়। দুইদিন যশোর শহরসহ জেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ৫জনকে আটক করা হয়। এছাড়া তাদের হেফাজত থেকে লুট করা ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫শ’ টাকা, দুটি চাকু ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো জানান, মোটরপার্টস ব্যবসায়ী এনামুল হকের ফলের আড়তের শ্রমিক টিপু এ ছিনতাইকান্ডের মাস্টারমাইন্ড। সে চিহ্নিত সন্ত্রাসী জামাই রাজা ও তার সহযোগীদের সহায়তায় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায়। পুরো ছিনতাইকান্ডে ৮ থেকে ১০ জন জড়িত। ছিনতায়ের সাথে জড়িত আরো ৪/৫ জনকে সন্দেহ করা হচ্ছে তাদেরকেও আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ছিনতায়ের ঘটনায় আগমনী মোটরসের স্বত্তাধিকারি ইকবাল হোসেনের দায়ের করা মামলায় আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহ উদ্দিন সিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি, কোতয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান, ডিবির ওসি সৌমেন দাস, সদর ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর তুষার মন্ডল, চাঁচড়া ফাঁড়ির ইন্সপেক্টও রকিবুজ্জামান প্রমুখ।

উল্লেখ্য মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের প্রান কেন্দ্র ইউ সি বি এল ব্যাংকের সামনে থেকে ছিনতাইকারিরা আগমনী মোটরসের ১৭ লাখ টাকা ছুরিকাঘাত করে ও বোমা মেরে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এখান থেকে কোতয়ালি থানার দুরত্ব প্রায় দেড়শো গজ। আগমনী মোটরসের স্বত্তাধিকারি ইকবাল হোসেনের ভাই এনামুল ও শ্যালক ইমন মোটরসাইকেলে করে জেস টাওয়ারের বিপরিতে ইউসিবিএল ব্যাংকে টাকা জমা দিতে আসে। সেখানে আগে থেকেই ৭/৮ জন ছিনতাইকারি অবস্তান করছিলো। এনামুল মোটরসাইকেল থেকে নেমে ব্যাংকে ঢোকার সময় ছিনতাইকারিরা টাকার ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করে। হাতাহাতির এক পর্যায়ে এনামুলের বুকে পিঠে ছিনতাইকারিরা বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে টাকার ব্যাগ সিটি প্লাজার সামনের রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ছিনতাইকারিরা একটি বোমার বিস্ফোরন ঘটায়। স্থানীয়রা আহত এনামুলকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তার অবস্থা অশংকা জনক হওয়ায় তাকে ওই দিনই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ছিনতাইয়ের ঘটনায় আগমনী মোটরসের স্বত্তাধিকারি ইকবাল হোসেন বুধবার ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কোতয়ালি থানায একটি মামলা করেন। মামলায় ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।