মশার কামড়ে যুবকের পা ফুলে কলাগাছ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গু, ম‍্যালেরিয়া কিংবা চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত অসুখে বহু মানুষ আক্রান্ত হন। কিন্তু শুধুমাত্র একটা মশার কামড়ে পুরো জীবনটাই বদলে গেল ২৭ বছরের এক যুবকের।

স্বপ্ন ছিল ফুটবল খেলোয়ার হবেন, কিন্তু মাত্র ৬ বছর বয়সে এক ভয়াবহ রোগের দরুণ তিনি আজ পা-ই তুলতে পারেন না। ফুটবল খেলে মাঠ কাঁপানোর ইচ্ছে, ইচ্ছেই রয়ে গেল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর আগে কম্বোডিয়ার একটি প্রদেশের বাসিন্দা বং চেটকে একটি মশা কামড় দিয়েছিল। তারপর থেকে তার পা ফুলতে শুরু করে, বর্তমানে তার পায়ের আকার স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ গুণ বড়। তিনি হাঁটার ক্ষমতাও হারিয়েছেন।

জানা যায়, ২০ বছর আগে বং চেটকে এক ধরণের মশা কামড় দিয়েছিল। পায়ে হালকা ক্ষতর দাগ ছিল, মা-বাবা বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামাননি। এরপর থেকেই বং চেটের পায়ে একাধিক ছোট ছোট মাংস পিণ্ড জন্মাতে শুরু করে। বেলুনের মতো ফুলতে থাকে তার পা। ১২ বছর বয়সে তাঁর পা আর পাঁচটা স্বাভাবিক মানুষের পায়ের থেকে পাঁচ গুণ বেশি ফুলে যায়।

বংয়ের বাবা মা স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। অভাব-অনটনের সংসার। সঠিক চিকিৎসা করাতে পারেননি ছেলের। ধীরে ধীরে একেবারেই হাঁটা-চলা বন্ধ হয়ে যায় বং-এর। স্কুল ছাড়তে হয়। কখনো সাহস করে জনসমক্ষে হাজির হলে হাসির পাত্র হয়েছেন। আর তাই একটা সময় পর নিজেকে সম্পূর্ণভাবে ঘরবন্দি করে নিয়েছেন বং।

বং-এর অসুখের কথা জানতে পেরে চলতি মাসের গোড়ার দিকে এক সহৃদয় মহিলা চিকিৎসার জন্য আড়াই হাজার ডলার আর্থিক সাহায্য করবেন বলে জানান। এর পর বংকে ভাল চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, বং লিম্ফ্যাটিক ফিলারিয়াসিস রোগে আক্রান্ত। এই রোগ এক ধরণের সুতোর মতো আকারের পোকা থেকে ছড়ায়। সেই পোকা শরীরে ঢোকে মশার কামড়ের মাধ্যমে। বং ছোট বয়সে না বুঝেই মশার কামড়ে তৈরি হওয়া ক্ষত আঁচড়েছিল, তা থেকেই ক্ষত ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন এখনো আবিষ্কার হয়নি, নেই কোনো চিকিৎসাও।