যশোরে বৃষ্টি-বাতাসে ধানের ক্ষতি, বেকায়দায় কৃষক

মাঠজুড়ে এখন আমন ধানের সবুজ গালিচা। লকলকিয়ে বেড়ে উঠেছে সর্বত্রে। অনেক ক্ষেতের ধান গোছে এসেছে পরিপূর্ণ থোর। এরই মধ্যে কোন-কোনো ধানের শীষে দুধ এসেছে। আবার কোন-কোন ধানের শীষ আধাপাকাও হয়ে গেছে। এখন থেকে বড়জোর মাস খানেক পরেই কষ্টে অর্জিত সোনালী ধান চাষিদের ঘরে উঠা শুরু হবে। ধান বিক্রির টাকা থেকে আগামী দিনে সংসারে নানা উন্নয়ন কাজের স্বপ্ন বুনে রেখেছে অনেকেই। কিন্তু কৃষকের এ স্বপ্নও গত দু’দিনের অবিরাম বর্ষন আর দমকা বাতাসে মাটির সাথে মিসে গেছে যশোর অঞ্চলের পরিপূর্ণ বহু ধান ক্ষেত। বেকায়দায় পড়েছে কৃষক। বৈরী আবহাওয়ার কারনে এবার আমন ধানও ঘরে উঠাতে বেশ বেগ পোহাতে হবে কৃষকদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক বর্ষায় এ উপজেলার কৃষকের রোপা আমন ধানসহ নানা জাতের ফসলের বেশ ক্ষতি হয়েছিলো। সেই ক্ষতি পুশিয়ে নিতে নতুন করে জমিতে আমন ধান রোপন করেন। ক্ষেতে বেড়ে উঠা সেই ধান গাছে নানা রোগ বালাই আক্রমন করে। বিশেষ করে পাতা মোড়ানো রোগ ও ইদুরের উপদ্রবে ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশংকা মাথায় নিয়ে ফসল রক্ষার রিতীমত যুদ্ধে নেমেছিল কৃষকেরা। এতে অনেক টাই সফল হলেও দুই দিনের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সাথে দমকা বাতাসে শুরু হয়ে বৈরী আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাব পড়েছে আমনের ক্ষেতে।
বৃষ্টিতে অনেক ধান ক্ষেতে পানি জমেগেছে। আবার দমকা বাতাসে ধান গাছ হেলে পড়ে মাটির সাথে মিসে গেছে। এতে ধানের থোর বা শীষ পানিতে ডুবে থাকায় পচন ধরার উপক্রম হয়েছে। পানিতে ডুবে থাকা ধানের শীষে চাল আসবে না। কয়েক দিন পর ধান গাছও শুকিয়ে মারা যাবে। কোন কোন ক্ষেতের ধান গাছ বেচে থাকলেও শীষ চিটায় পরিণত হবে।

যশোর সদর উপজেলার হাটবিলার কৃষক মনিরুজ্জামান মহব্বত জানান, বৃষ্টি পরিবর্তি সময়ে ধানক্ষেতে নানা রোগ বালাই আক্রমন করে। কীটনাশক প্রয়োগে ধানের রোগ বালাই দমন করা হয়। কিন্তু অতিবৃষ্টি আর দমকা বাতাসের ক্ষতি থেকে ধানক্ষেত রক্ষা করা সম্ভব হলো না। এবার আমন ধানে আশানুরুপ ফলন হয়তো পাবোনা।

উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতিমা রানী বলেন, ক্ষেতের ধান গাছ হেলে পড়ে থাকলে কিছুটা ক্ষতি তো হবেই। বিশেষ করে যে সব ধানের শীষ অপরিপক্ক রয়েছে, সে গুলোর ক্ষতি হবে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় সব চেয়ে বেশী ক্ষতির আশংকা রয়েছে বিভিন্ন জাতের সবজিক্ষেতের।