তিনটি পৃথক প্যাথলজিক্যাল রিপোর্টে গর্ভে যমজ শিশুর অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়ার পরও সিজারের পর একটি নবজাতক গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাগুরার পিয়ারলেস মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড হাসপাতাল প্রাইভেট ক্লিনিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে একটি শিশুকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নন্দীরগাতি গ্রামের ইমদাদুল মোল্লা ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগে জানান, গত ২৭ জুন তার বোন আরজিনা বেগমকে মাগুরা শহরের পিয়ারলেস মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড হাসপাতাল প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারের জন্য ভর্তি করা হয়। আরজিনা বেগমের পূর্বের আল্ট্রাসনোগ্রাম ও অন্যান্য পরীক্ষায় স্পষ্টভাবে যমজ সন্তানের অস্তিত্ব দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ২৮ জুন সিজারিয়ানের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি সন্তান দিয়েছে এবং বাকিটি বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইমদাদুল মোল্লা।
ইমদাদুল মোল্লা জানান, তার বোন গর্ভবতী হওয়ার পর গত ১৮ এপ্রিল শৈলকুপার লাঙ্গলবাঁধ বাজারের শান্তনু ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। সেখানকার চিকিৎসক শারমিন আক্তার এ্যানি রিপোর্টে আরজিনা বেগমের গর্ভে যমজ সন্তান থাকার কথা উল্লেখ করেন। এরপর গত ২ জুন শৈলকুপার সাহিদা প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ২৭ জুন মাগুরা শহরের পিয়ারলেস মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড প্রাইভেট হাসপাতালেও আরও দুটি পরীক্ষা করানো হয়। এই দুটি আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টেও চিকিৎসক ডাঃ সোনিয়া আক্তার মুক্তা ও ডাঃ অরুণ কান্তি ঘোষ আরজিনা বেগমের গর্ভে যমজ সন্তান থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অথচ সিজারের পর একটি সন্তান রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায়।
এই সন্তান চুরির সঙ্গে ক্লিনিক মালিক ফরহাদ হোসেন, চিকিৎসক তপন রায়, ডাঃ অরুণ কান্তি ঘোষ, ক্লিনিকের ম্যানেজার সেলিম এবং ল্যাব ম্যানেজার সাকিল জড়িত বলে মাগুরা সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এই সিজারিয়ান অপারেশনকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আরজিনা বেগমের আল্ট্রাসনোগ্রাম ও অন্যান্য পরীক্ষায় স্পষ্টভাবে যমজ সন্তানের অস্তিত্ব দেখা গেলেও, সিজারিয়ানের পর চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় সন্তানের বিষয়ে কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে ক্লিনিক মালিক ফরহাদ হোসেন জানান, এ ঘটনার সঙ্গে তার ক্লিনিক কোনোভাবেই জড়িত নয়। তিনি কেবল অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ভাড়া দিয়েছিলেন। চিকিৎসকরাই ভালো বলতে পারবেন ওই মহিলার গর্ভে যমজ সন্তান ছিল কিনা।
মাগুরা সিভিল সার্জন ডাঃ শামিম কবীর জানিয়েছেন, এ বিষয়ে বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।