সুর নরম করলেও দুঃখ প্রকাশ করেননি ম্যাক্রোঁ

মহানবীকে (সা.) বিদ্রূপ করে কার্টুন প্রকাশে সমর্থন ও ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্যের কারণে সৃষ্ট তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে সুর নরম করলেও ক্ষমা চাননি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় অভিযোগ করেন ম্যাক্রোঁ। তবে তার বক্তব্যে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ সৃষ্টি হলেও এর জন্য দুঃখপ্রকাশ করেননি তিনি।

আলজাজিরা আরবিতে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটিতে ম্যাক্রোঁ জানান, মহানবীকে (সা.) অবমাননা করে কার্টুন প্রকাশে মুসলমানদের অনুভূতি কেমন হতে পারে, সেটি তিনি বুঝতে পারছেন।

মহানবীর কার্টুন আঁকাকে সমর্থন করেন না জানিয়ে ম্যাক্রোঁ জানান, তার সরকার এই কার্টুন আঁকাকে সমর্থন করবে না বলে জোর দিয়েছিলো। কিন্তু কথা বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় মানুষ মনে করেছে, তিনি কার্টুনগুলো সমর্থন করেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, এখন দুইটি জিনিস করতে হবে। শান্তি প্রচার করা এবং এই অধিকারগুলো রক্ষা করা। আমি সব সময় আমার দেশে কথা বলার, লেখার, চিন্তাভাবনা করার ও ছবি আঁকার স্বাধীনতা রক্ষা করবো।

ম্যাক্রোঁ আরো বলেন, কিছু মানুষ আছে যারা ইসলাম ধর্মের বিকৃতি ঘটাচ্ছে এবং এই ধর্মের নাম নিয়ে এটি রক্ষার ঝাণ্ডা হাতে তুলে নিয়েছে।

যারা ইসলাম বিকৃত করে তাদের আচরণে মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলেও মন্তব্য করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

ম্যাক্রোঁ জানান, তিনি ‘উগ্রপন্থী ইসলাম’-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেষ্টা করছেন যা সব মানুষ, বিশেষ করে মুসলমানদের জন্য হুমকি।

কয়েকদিন আগে খুন হওয়া ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে সম্মান জানাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইসলাম ধর্ম ও বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

এরপরই ফ্রান্সের মুসলিমরা ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, তাদের ধর্মকে দমন করা ও ইসলামফোবিয়াকে বৈধতা দিতে চেষ্টা করছেন তিনি।

ম্যাঁক্রোর এমন বিতর্কিত মন্তব্যের পরই তুরস্ক এবং পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ নিন্দা জানিয়েছে। এদিকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা দরকার।

জবাবে মুসলিম বিশ্ব থেকে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক এসেছে। এর মাঝে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানান।

শুধু আরবরাই নয় পুরো মুসলিম বিশ্বেই ফরাসি পণ্য বয়কটের হিড়িক পড়ে গেছে।

দোকান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে ফেলছে অনেক খ্যাতনামা চেইন শপসহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

করোনা মহামারীকালে এই বয়কটের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আঁচ করতে পেরে আরব দেশগুলোর প্রতি পণ্য বয়কট বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে ফ্রান্স।