আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত রূপদিয়া অঞ্চলের কৃষক

নানা প্রতিকুলতা পেরিয়ে রূপদিয়া ও আশপাশের অঞ্চলের কৃষকের কষ্টার্জিত পাঁকা ফসল আমন ধান ঘরে তোলার তোড়জোড় চলছে। মাঠের পর মাঠ এখন সোনালি রঙের পাকা ধানে সয়লাব। যতদূর চোখ যায় পাকা ধানের ক্ষেতে পূবালী বাতাসে দোল খেলানো অপরূপ দৃশ্য । মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে আমন চাষিদের ধান কাটার মহোৎসব।

যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর, কচুয়া, বসুন্দিয়া সহ আশপাশের গ্রামের মাঠ জুড়ে চলছে ধান কেটে ঘরে তোলার তোড়জোড়। চাষি-গৃহস্থ সবাই এখন মহা ব্যস্ত মাঠের পাকা ধান গোলায় তুলতে। এসব এলাকার কৃষকের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ততায় দিন কাটছে কৃষাণ-কৃষাণির। এরই মধ্যে অনেকে আবার আগাম পাকা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে ঝাড়াসহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করেছে।

রূপদিয়া এলাকার জিরাট গ্রামের আমন চাষি ফারুক হোসেন বলেন, এ এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন আমন ধান কাটার প্রস্তুতি চলছে। এ বছর আল্লাহর রহমতে ফলনও বেশ ভালো হয়েছে, এতে আমরা খুব খুশি। কিন্তু ফড়িয়া বা মধ্যসত্বভোগীদের তৎপরতায় ফসলের কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাওয়া নিয়ে বেশ শঙ্কাগ্রস্ত। তার মতো আরো অনেক কৃষকের অভিযোগ, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। প্রান্তিক পর্যায়ে প্রকৃত কৃষক বা চাষিদের কাছ থেকে সরকার ধান ক্রয় করলে ন্যায্য মূল্য পাবে।

সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের বহু গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠে সোনালি রঙের পাকা আমন ধানে পরিপূর্ণ। যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে পাকা ধানের সমারোহ। কোনো কোনো ক্ষেতে কৃষকরা ধান কাটছেন। কৃষকেরা কেউ ধান কাটায় ব্যস্ত, কেউ আটি বাঁধায়। আবার কেউ ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই কারোরই। হালকা শীতের মিষ্টি সকাল থেকে পড়ন্ত বেলা পর্যন্ত মাঠে মাঠে ফসল কাটছেন কৃষকরা।

একদিকে কৃষকরা ধান কেটে বাড়ির আঙিনায় জড়ো করছেন। অন্যদিকে মেশিন দিয়ে ধান ঝাড়ার কাজ করছে গৃহস্থরা। সাথে সাথে ধান মাড়াই শেষে বাতাসে উড়িয়ে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করে গোলায় তোলার কাজে বেশ ব্যস্ত বাড়ির নারীরাও। এসব এলাকার কৃষক আশা করছেন এবার ন্যায্যমূল্য পাবেন। বিভিন্ন প্রতিকুলতা ও পোকার আক্রমণের পরও এবার আমন চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতিমা রানী জানান, এবার আমনের ফলন ভালো হয়েছে। যশোর জেলার রূপদিয়া অঞ্চল তথা নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে এবার আমন ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে।