থাই পেয়ারা চাষে ভাগ্য ফিরেছে যশোরের সুমনের

৪ বিঘা জমিতে থাই পেয়ারার বাগান করে ভাগ্য পাল্টেছে ভবঘুরে যুবক মঞ্জুরুল ইসলাম সুমনের। মাত্র ২ বছরের মধ্যে তার এই সফলতায় সুদিনের হাওয়া বইছে পরিবারের মাঝে। পাশাপাশি তার গড়ে তোলা পেয়ারা বাগানে কাজ করে খেয়ে পরে ভালো আছে আরও ৪-৫টি পরিবার।

যশোর সদর উপজেলার হাটবিলা গ্রামের মশিয়ার রহমানের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম সুমন পার্শবর্তী কচুয়া গ্রামে ৪ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ২০১৭ সালে গড়ে তোলেন থাই পেয়ারার এই বাগান। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি এক সময়ের ভবঘুরে বেকার যুবক সুমনের। বাগানটি শুরুর পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফলন পেতে শুরু করেন।

সুমন বলেন, তার জমিতে বর্তমানে ১ হাজার ২শ ফলনশীল থাই পেয়ারা গাছ রয়েছে। সরেজমিনে বাগানটি ঘুরে দেখা যায়, ছোট ছোট গাছে থাই জাতের পেয়ারায় ভরে গেছে পুরো বাগান। পোকা-মাকড় ও ধুলাবালি থেকে রক্ষায় প্রতিটা পেয়ারা পলিথিনে মুড়ে প্যাকেজিং এর কাজ করছে সুমন সহ আরোও ৫-৬ জন ব্যক্তি।

জানা যায়, বছরের মাঝামাঝি সময়ে সবচেয়ে বেশি পেয়ারা ধরে এ জাতের পেয়ারা গাছে। তবে পরিচর্যার ফলে এক নাগাড়ে ৫-৭ বছর পর্যন্ত প্রায় ১২ মাসই ফল ধরে এ গাছগুলোতে। চারা লাগানোর ১০-১২ মাস পর থেকেই ফল দিতে শুরু করে থাই জাতের এ পেয়ারা। বর্তমানে স্থানীয় বাজার-ঘাটে এ পেয়ারার দাম ও চাহিদা রয়েছে বেশ। সুমনের দাবী থাই পেয়ারা বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু ছাড়াও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তাই বর্তমানে বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। ফলে সহজেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করা যায়। প্রতি কেজি থাই পেয়ারা বর্তমানে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি দামে বাগান থেকেই বিক্রি করেন সুমন।

তার পেয়ারা চাষের সাফল্যে ইতোমধ্যেই এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে তিনি পেয়ারা বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সুমন বলেন, ৪ বিঘা জমিতে পেয়ারার চাষ করেছি। প্রথম দিকে ফলন একটু কম হলেও গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব গাছে ফলনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঠিক পরিচর্যার কারনে এখন প্রতি দিনই ফল বিক্রি করতে পারি। আমিসহ ৬-৭ জন লোক বাগানে নিয়মিত কাজ করছি। অনেকে এখন আমার কাছে পরামর্শ নিতে আসে। আমি তাদের পেয়ারা চাষ করতে বলি। এটি ভালো জাতের পেয়ারা। কম খরচ এতে অনেক বেশি ফলন হয়। লাভও হচ্ছে ভালো। পেয়ারা বাগানে কাজ করে প্রতিদিন যা আয় হয় তাতে আমরা পরিবার নিয়ে খেয়ে পরে ভাল আছি বলে জানালেন বাগানে কাজ করতে আসা শ্রমিকরা।

শহর থেকে অনেক পাইকাররা এসে বাগান থেকে পেয়ারা কিনে নিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন বলে জানালেন পেয়ারা কিনতে আসা মঈন উদ্দিন নামের এক পাইকার।