রাত পোহালেই যশোর সদর ও বাঘারপাড়ায় ভোটযুদ্ধ

রাত পোহালেই যশোর সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন চলবে ভোটগ্রহণ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) মধ্য রাত থেকে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে।

জেলা ডিএসবির পরিদর্শক (ডিআইওয়ান) মসিউর রহমান জানিয়েছেন, দুউপজেলায় ১২৯ ভোট কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সদর উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অ্যাডভোকেট সেতারা খাতুন হাঁস প্রতীক ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জ্যোৎস্না আরা মিলি কলস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রয়াত চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম কাজলের সহধর্মিনী ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ভিক্টোরিয়া পারভিন সাথী নৌকা প্রতীক ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শামসুর রহমান ধানের শীষ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দীন মোহাম্মদ দিলু পাটোয়ারী আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, আগামী ১০ ডিসেম্বর সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন। সদর উপজেলা নির্বাচনে ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৫২৪ জন ভোটারের ভোট গ্রহণ করা হবে ১৭৫টি কেন্দ্রে। ভোট কেন্দ্রে সার্বিক নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য ১৭৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ১৩ জন পোলিং অফিসার নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য ১ হাজার ৪শ ৭৮টি ব্যালট বক্স থাকবে। সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে এই নির্বাচনে সদর উপজেলায় ৮৬টি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

অন্যদিকে, বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনে উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৭৯ জন। ৬৩ কেন্দ্রে বুথ রয়েছে ৪২৪ টি। এর মধ্যে ৬৩ কেন্দ্রে ৬৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। ৪২৪ টি বুথে দায়িত্ব পালন করবেন ১ জন করে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রতিটি বুথে ২জন করে পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। আর এই উপজেলায় ৬৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৪৩টি।

এছাড়া দুটি উপজেলায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত থাকছে। সেই সাথে জুডিসিয়াল, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। করোনার সংক্রমণ থেকে ভোটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশ পথে সাবান পানির ব্যবস্থা থাকছে। এর সাথে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ভোটার ও ভোট গ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিতদের বাধ্যতামূলক মাস্কও সরবরাহ করা হবে।

এদিকে, শেষ সময়ের প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন সদর উপজেলা ও বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের প্রার্থী ও তার কর্মীরা। নির্বাচনে জয়ী হতে বিভিন্ন কৌশলে ভোটারদের মন জয় করতে শেষ দিনের মতো সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি মাঠে ছিলেন প্রার্থীর হাজারোও কর্মী-সমর্থক। দুউপজেলার অংশ নেওয়া ৫ প্রার্থীই সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের আশাবাদী। সেইসাথে সব প্রার্থীই বিজয়ী হওয়ার আশাব্যক্ত করেছেন।

জানতে চাইলে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান, নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন অফিস ও প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। নির্বাচনের দিন সকালে নির্বাচনী কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রত্যেকটি কেন্দ্রের জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বক্স, ব্যালট পেপার, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হবে। করোনার মধ্যেও যশোরে কয়েকটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগিয়ে আসন্ন ১০ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা রিটার্নিং অফিস ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।