‘সরকারি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে নিতে হবে’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, দেশকে উন্নত করতে হলে সরকারি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বেসরকারি শিল্প খাতকেও এগিয়ে নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে বহু শিল্প স্থাপনের সুযোগ দিয়েছেন। কোভিডকালে পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে তৃণমূল পর্যায়ের খামারিরা যাতে বিপন্ন অবস্থায় না পড়ে, তারা যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য তাদের প্রণোদনা, নগদ সহায়তা দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।

শনিবার রংপুরের বদরগঞ্জে বেসরকারি এগ্রো বেইজড প্রতিষ্ঠান ইয়ন গ্রুপের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হাইটেক ডেইরি ফার্ম এবং ‘বাকারা’ পাস্তুরিত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

এ সময় ইয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও মোমিন উদ দৌলার সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ মো. ইমদাদুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক শেখ আজিজুর রহমান, রংপুর জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মধুসূদন রায়, বদরগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান এবং রংপুর বিভাগের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, খাবারের একটা বড় অংশের যোগান দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত। এ খাতে ইয়ন গ্রুপের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই এবং এক্ষেত্রে সকল প্রকার সহায়তা তাদের দেয়া হবে। করোনাকালে বিদেশ থেকে মৎস্য ও প্রাণী খাদ্য আনার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছিল। মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নিয়ে খাদ্য সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। একইভাবে রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে যতটুকু সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন ছিল, আমরা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সাথে সম্পৃক্তদের চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়তে হয়নি। এমনকি এ খাতের শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য উৎসে কর বাদ দেয়া হয়েছে। এটা এ খাতকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও যোগ করেন, বাংলাদেশ এক সময় ছিল অন্ধকারের মধ্যে। উন্নয়নের জায়গায় অন্ধকার, নিয়মের জায়গায় দুর্নীতিসহ নানাভাবে দেশ বিপন্ন অবস্থায় ছিল। বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন। একজন শেখ হাসিনা থাকলে সে জাতি নিরন্তর গতিতে এগিয়ে যাবেই। কোনো প্রতিকুলতা বা কণ্টকাকীর্ণ অবস্থা তার পথ রুদ্ধ করতে পারে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আরও বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে যারা ইয়ন গ্রুপের মতো উদ্যোগ নিয়ে কাজ করবেন তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতা থাকবে। শেখ হাসিনার উন্নয়নের বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি খাতকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের বলবো, বেসরকারি খাতে কোন সহযোগিতা লাগলে তাদেরকে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দেখাবেন না। যেকোন মূল্যে তাদের সহায়তা করতে হবে, যাতে তারা এই খাতকে পরিত্যক্ত করে চলে না যান। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বেসরকারি খাতের পাশে দাঁড়ানোর মানে হলো বাংলাদেশের উন্নয়নের পাশে দাঁড়ানো। শেখ হাসিনার অভীষ্ট লক্ষ্যের পাশে দাঁড়ানো। সেটা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

পরে মন্ত্রী রংপুর বিভাগে কর্মরত প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য বিভাগের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন ও বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।