মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে নিরাপত্তা পরিষদের উদ্বেগ

মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৃহস্পতিবার এক খসড়া বিবৃতিতে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি স্টেট কাউন্সিলর সু চিসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল বন্দির মুক্তি দাবি করা হয়েছে। তবে জরুরি সভার বৈঠকের পর যুক্তরাজ্য কর্তৃক লিখিত ওই বিবৃতিতে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানানো হয়নি।

কূটনীতিকরা বলেছেন, জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রধান সমর্থক চীন এবং রাশিয়া ভেটো দেয়ায় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মিয়ানমার সেনাদের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবের জন্য আরও সময় লাগবে। ওই বিবৃতিতে মিয়ামনারে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরার জন্য সংলাপে বসার প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে।

নিরাপত্তা কাউন্সিলের এমন বিবৃতি প্রসঙ্গে জাতিসংঘে নিয়োজিত এক কূটনৈতিক বলেন, কোনো বার্তা না দেয়ার চেয়ে কিছু বার্তা দেয়া উত্তম। চীনের কারণে নিন্দা পাসের সম্মতি অসম্ভব।

চীনের কমিউনিস্ট নেতারা মিয়ানমারের অভ্যুত্থানে ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করেছে। তারা মিয়ানমারের উভয়পক্ষকে মতপার্থক্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সামরিক অভ্যুত্থানকে ‘মন্ত্রিসভার বড় রদবদল’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

মিয়ানমার চীনের সুবিশাল বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো উদ্দ্যোগের অন্যতম অংশীদার। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন মিয়ানমারে দ্রুত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়া মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত বছরের অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে অভ্যুত্থান বৈধ করার চেষ্টা করছে। ওই নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক লীগ (এনএলডি) ব্যাপক জয় পায়।

গত সোমবার ভোরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সু চিসহ তার মন্ত্রিসভার ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তারা অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় এবং এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারির কথা জানায়।

সু চির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখার চার্জশিট গঠন করা হয়েছে। এই মামলায় তার দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি যে অভিযোগ তুলছে সেটা তদন্তের পরিকল্পনা করছে। সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড।