পাপুলের স্ত্রী-কন্যার জামিন আবেদনে নথি জালিয়াতি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

বহুল আলোচিত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কুয়েতে কারাবন্দী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ের জামিন আবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি জালিয়াতির ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুইমাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে দুদককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, তার মেয়ে ওয়াফা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে দাখিল করা এক নথির পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা সুয়োমোটো রুলের ওপর শুনানিকালে এ আদেশ দেওয়া হয়।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি শুনানিকালে নথি জালিয়াতির বিষয়টি তদন্তের আবেদন জানান বাংলাদেশ ব্যাংক, রাষ্ট্রপক্ষ এবং জামিন আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবীরা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। জামিন আবেদনকারীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোতাহার হোসেন সাজু। বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক আরেফিন আহসান মিঞার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তানভীর পারভেজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার অর্থ পাচারের অভিযোগে শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী, কন্যা ও শ্যালিকার বিরুদ্ধে গতবছর ১১ নভেম্বর মামলা করে দুদক। এ মামলায় গতবছর ২৬ নভেম্বর তারা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। তবে পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এই শুনানিতে নথি জালিয়াতির অভিযোগ আদালতের সামনে আসে। এরপর ওই নথিতে স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক মো. আরেফিন আহসান মিঞাকে তলব করে সুয়োমোটো রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে গতকাল এ আদেশ দেন।

গতবছর ৬ জুন কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) শহিদ ইসলাম পাপুলকে কুয়েতে গ্রেপ্তার করে। কুয়েত সিআইডি তার বিরুদ্ধে সেখানে মানবপাচার ও অর্থপাচারের মামলা করে। ঘুষ দেওয়ার দায়ে কুয়েতের আদালত কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে ৪ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এখনও সেখানে মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে শাস্তি ঘোষনা করা হয়নি। এ বিষয়টি সেদেশের আদালতে বিচারাধীন। এমপি পাপুল কুয়েতের কারাগারে বন্দী।