নির্ভয়ে খান খামারের মুরগির মাংস ডিম: খাদ্যমন্ত্রী

abdur razzak
ফাইল ছবি

দেশে পোল্ট্রি খামারে উৎপাদিত মুরগির মাংস, ডিম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় জানিয়ে সবাইকে নির্ভয়ে তা খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের মধ্যে বুধবার আর্থিক প্রণোদনা বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “দেশে উৎপাদিত ফার্মের মুরগির মাংস খেলে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই। কারণ ফার্মের মুরগিকে স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাদ্য দিয়ে বড় করা হচ্ছে, যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর নয়।”

“আমরা মুরগীর মাংস পরীক্ষা করে দেখেছি আমাদের দেশে উৎপাদিত ফার্মের মুরগির মাংসে ক্ষতিকর কিছু নেই।” অনুষ্ঠানে মৎস চাষী ও প্রাণী সম্পদ খামারিদের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক, বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে প্রণোদনার অর্থ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে মৎস ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বক্তব্য রাখেন।

খাদ্যমন্ত্রী খামারের মুরগিকে টিকা দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ফার্মের মুরগিকে যে টিকা দেওয়া হচ্ছে তাও মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর নয়।”

ভুট্টায় তৈরি মুরগির খাবার স্বাস্থ্যসম্মত জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশে এখন পাঁচ থেকে ছয় কোটি টন ভুট্টা উৎপাদন হচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ ভুট্টা দিয়ে মুরগির খাদ্য তৈরি হচ্ছে। অথচ মাত্র ১০ বছর আগেও দেশে মাত্র এক কোটি টন ভুট্টা উৎপাদন হত।”

মুরগির খাবার তৈরিতে ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহারের দাবিকে গুজব আখ্যায়িত করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “দেশে ছয় কোটি টন ভুট্টা দিয়ে যেখানে খাদ্য তৈরি হচ্ছে, সেখানে মানুষ কেন সাভারের ওই ট্যানারি বর্জ্য খুঁজতে যাবে, আর কতটুকুই বা ওই বর্জ্য হয়।”

তিনি নিজে খামারের মুরগি খান দাবি করে গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে খাওয়ারও আহ্বান জানান মন্ত্রী।

দেশ এখন দানাদার খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ দাবি করে তিনি বলেন, “ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। দেশের মানুষের পুষ্টির যোগান দিতে বছরে এখন ৭০ থেকে ৮০ লাখ টন মাংস, ১৭০০ কোটি ডিম উৎপাদন হচ্ছে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “করোনা আমাদের কিছু ক্ষতি করেছে। কিন্তু তা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। আমরা চীন, ভারতের তুলনায় অনেক ভালো করেছি।

“গ্রামীণ উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রি করে যেন বেশি আয় করতে পারে তার জন্য আমরা সড়ক, কালভার্ট, সেতুসহ গ্রামীণ মানুষের জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো তৈরিকে প্রধান অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”

সভাপতির বক্তব্যে শ ম রেজাউল করিম জানান, মহামরীর মধ্যে সরকার ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চার লাখ ৭৪০২ জনকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৭৮ হাজার মৎস চাষীকে প্রণোদনা হিসেবে ৫৬৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আরও দুই লাখ খামারিকে প্রণোদনা দেওয়ার কথা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পিরোজপুর, সুনামগঞ্জ, বরগুনা, টাঙ্গাইল এবং পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে প্রণোদনাপ্রাপ্তরা বক্তব্য দেন।