সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে।
শাল্লায় হামলার ঘটনায় ফখরুল বলেন, আমি তো বলেছি একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে দেখুন, জরিপ করে দেখুন। হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের কত জমি, কত বাড়ি কারা দখল করে আছে। দেখবেন বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ দখল করে আছে।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ২৪ মার্চ কালো দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ’৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এই সভার আয়োজন করে।
ফখরুল আরও বলেন, আজকে সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক বিনষ্ট হয়েছে শাল্লা থানায়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- এই হামলা বিএনপি করেছে। তাহলে ধরা পড়ল কে? প্রথম আসামি যিনি গ্রেফতার হলেন তিনি তো যুবলীগ নেতা স্বাধীন মেম্বার। আর আপনারা বলছেন- এই হামলার ঘটনা বিএনপি ঘটিয়েছে। আসলে সমস্যাটা হচ্ছে কী, ওরা তো প্রতিরাতে দুঃস্বপ্ন দেখে। বিএনপি ছাড়া ওদের মুখে আর কোনো কথা বের হয় না। সারাক্ষণ বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে থাকে।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি যে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে হবে। এতটুকু জায়গার মধ্যে ১২ লাখ লোককে রাখা, তাদের ভরণপোষণ করা, তাদের সুন্দরভাবে রাখা (ওহ আমরা তো এখন গরিব নই, উচ্চদিকে যাচ্ছি)। আমরা বলছি এটা সমাধান করার চেষ্টা করুন। আপনারা সমাধান করছেন না। আপনারা এটাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। আপনাদের কোনো উদ্যোগ নেই। আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো রাষ্ট্রীয় সফর করেননি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সবসময় বলেন যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আছে, রক্তের সম্পর্ক আছে। সেই ভারত তো আমাদের পক্ষে রোহিঙ্গাদের সরানোর জন্য কোনো কথা বলেনি। চীনের সঙ্গে আমাদের চমৎকার বন্ধুত্ব, সেই চীন তো রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। কেন, আপনাদের ব্যর্থতার জন্য। আপনাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতার জন্য আজকে আপনারা সমগ্র বিশ্বকে পক্ষে আনতে পারেননি।
তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসছে। যত রকমের মিথ্যাচার তারা করছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যা যা করা দরকার তারা তাই করছে। এভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না।
আজকে আলজাজিরায় যে রিপোর্ট এসেছে, ডয়েচে ভেলেতে যে রিপোর্ট এসেছে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী ওই দিনই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশের চালের দাম বেড়েছে। মোটা চালের দাম ৮০ টাকা, তেল, লবণের দামও বেড়েছে। কৃষক এখন পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। দেশের গরিব মানুষগুলো আরও গরিব হচ্ছে। আর ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। উন্নয়নের নামে নেওয়া মেগা প্রকল্পগুলোতে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। আবার এখন টিকা নিয়ে দুর্নীতি চলছে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- সাবেক ছাত্রনেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
